-->

নীলষষ্টি ব্রতকথা এবং ব্রতের নিয়ম। Nil Shashthi Brata khata

নীলষষ্টি ব্রতকথা এবং ব্রতের নিয়ম। Nil Shashthi Brata khata, জেনে নিন নীলষষ্টি ব্রতকথা এবংব্রতের নিয়ম । Nil Shashthi Brata khata with PDF, নীলষষ্টি ব্রত পালন করলে কি ফল?  নীলষষ্টি ব্রতের সঠিক নিয়ম।

নীলষষ্টি ব্রতকথা


নীলষষ্টি ব্রতকথা এবং ব্রতের নিয়ম

ব্রতের নিয়মঃ 

সন্তানাদির মায়েবা এই ব্রত পালন করতে পারে। চৈত্র মাসভ্যের শিবের পূজা করে 'নীল' এর দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন উপোস করে লীলাবতীর পূজা দিয়ে নীলের বা নীলকন্ঠ শিবের মন্দিরে ঘি এর প্রদীপ জ্বালিয়ে পূজা দিতে হয়। তারপর জল খেতে হয়। মেয়েরা মায়ের লীলাবতীর পূজার পর খেতে পারে কিন্তু ছেলের মায়েরা তা পারে না। এদিন অম্ল অর্থাৎ ভাত জাতীয় কিছু খেতে নেই। নীলের আগের দিন নিরামিষ খেয়ে সংযমীভাবে থাকতে হয়।

ব্রতের সময় বা কালঃ

চৈত্র মাসের সংক্রান্তির দিন মেয়েরা এই ব্রত করবে। 

ব্রতের দ্রব্য ও বিধানঃ 

 বেলপাতা, ডাব, বেল, শশা, আতপচাল আর ফল। চৈত্র মাসের সংক্রান্তির দিন সারা দিন উপোস করে থেকে সন্ধ্যের সময় শিবের মাথায় ডাবের জল ঢেলে শিবকে প্রণাম করে তার পর জল খেতে হয়।

ব্রতকথাঃ 

দীর্ঘদিন আগে এক দেশে এক বামুন ও তার বউ বাস করতো। ঠাকুর দেবতার উপর তাদের অগাধ ভক্তি ছিলো। তারা প্রতিটি বার ব্রত সবই করতো। সকল দেবতাকে মানতো। কিন্তু তাদের ভাগ্য এত খারাপ ছিলো যে তাদের কোনো ছেলে বাঁচতো না। ছেলে বা মেয়ে জন্মাবার কিছুকালের মধ্যেই সবই মারা যেতো। এই নিয়ে তাদের মনে দুঃখ ছিলো। তাদের প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ে মারা যেতে ঠাকুর দেবতার উপর ভক্তি তাদের ছিলো না। বললেই চলে। ঠাকুর দেবতার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলো তারা দুজনে।

তাদের সব ছেলে-মেয়ে মারা যাবার পর তারা দুই স্বামী-স্ত্রী মিলে কাশীতে চলে গেছিলো। সেইখানে মনিকর্ণিকায় স্নান করার পর একদিন বামনী বসে বসে তাদের অদৃষ্টের কথা ভাবছে এমন সময় মা ষষ্ঠী একটা বুড়ির বেশ ধরে তার কাছে গিয়ে জানতে চাইলেন যে সে কী ভাবছে। উত্তরে নিজের ভাগ্যের কথা সব বলল সেই বামনী। সে বলল যে সে আর তার স্বামী সকল ঠাকুর-দেবতার পূজা করতো সব বার-ব্রত পালন করত তবুও তাদের কোনো ছেলে বাঁচেনি। তাই তাদের মন ভেঙ্গে গেছে। তারা ঠাকুর দেবতার উপর আর আস্থা রাখে না। এই কথা শুনে মা ষষ্ঠী তাকে বলল যে, বার-ব্রত পালন কখনো বিফলে যায় না। ঠাকুর দেবতাও কখনো মিথ্যা হয় না। তারপর বললেন যে বামনী যদি কখনো নীলষষ্ঠীর ব্রত না করে থাকে তবে সেই ব্রত সে যেন অবশ্যই পালন করে। কারণ ছেলে-মেয়ে অর্থাৎ সন্তানাদির দেবী হলেন মা ষষ্ঠী। আর এই নীলবষ্ঠী ব্রত পালন করলে তার কোনো ছেলেই আর মরবে না। এই কথা শুনে সেই বামনী তাঁকে এই ব্রতের নিয়ম জানতে চাইলে তিনি বললেন যে, সারাটা চৈত্র মাস ধরে শিবের পূজা করতে হয়। চৈত্র মাসের সংক্রান্তির আগের দিন উপোস থাকতে হয় এবং শিবের মন্দিরে ঘি-এর প্রদীপ জ্বালতে হয়। এরপর মা ষষ্ঠীকে প্রণাম করে জল খেতে হয়। এই কথাগুলি বলার পর মা ষষ্ঠী - চলে গেলেন।


এই কথাগুলি শোনার পর সমস্ত নিয়ম মেনে বামনী নীলষষ্ঠী ব্রত পালন করতে লাগলো। দেখতে দেখতে তার আবার ছেলে-মেয়ে হল। সবাই বড় হল। কেউ আর মারা গেলো না। তারপর বামনের খ্যাতি হল। তাদের ধন-ঐশ্বর্যও ভরে গেলো। তারা সুখেই ছেলে-মেয়ে নিয়ে দিন যাপন করতে লাগলো। এইভাবে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ল এই ব্রত মাহাত্ম্য কথা।

ব্রতফল : 

ছেলে-মেয়ের মায়েরা এই ব্রত করলে তাদের সন্তানদের অমঙ্গল কোনো দিনই হয় না। পুত্রবর্তীরা এই ব্রত নিয়মিত উক্তিভরে পালন করলে তাদের ছেলে-মেয়ে কখনো অকালে মরে না। তাদের পুত্র-কন্যার শোক ভোগ করতে হয়না এবং তারা ধন-ঐশ্বর্যা স্বামী, পুত্র-কন্যা নিয়ে পরম সুখেই দিন যাপন করতে পারে।

You May Like Also Also Like This

Post a Comment

0 Comments


Advertisement