-->

বিশ্বকর্মা পূজা মন্ত্র ও পুজা পদ্ধতি ফর্দমালা সহ Vishwakarma Puja

বিশ্বকর্মা পূজা হলো হিন্দু ধর্মের দেবতা বিশ্বকর্মা (Vishwakarma) এবং তার পূজা করা হয়। বিশ্বকর্মা হলো শিল্পকর্ম এবং যানচালনার দেবতা, এবং তিনি বিভিন্ন প্রকারের শিল্পকর্মের দেবতা হিসেবে পূজা করা হয়। এই পূজা বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, স্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং অন্যান্য হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত। এটি প্রতিবছর বাঙালি ক্যালেন্ডারের অনুযায়ী আশ্বিন মাসে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) পালিত হয়।

বিশ্বকর্মা পূজা মন্ত্র ও পুজা পদ্ধতি ফর্দমালা
বিশ্বকর্মা পূজা মন্ত্র ও পুজা পদ্ধতি ফর্দমালা


বিশ্বকর্মা পূজা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শিল্পকর্মীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব হয় এবং এটি শিল্পকর্মীদের কাজের সর্বোত্তম দেখানোর এবং নতুন প্রকল্পের শুরু করার পরিকল্পনা করার সময় হয়। পূজার সময়ে বিশেষ ধরনের প্রসাদ, ফুল, ফল, নীরজন সমর্পণ, অর্চনা, ধূপ, দিয়া, সংগীত, ও নৃত্যের আয়োজন করা হয়, এবং মন্দিরে বিশ্বকর্মার মূর্তির সামনে পূজা প্রদর্শন করা হয়।

 

বিশ্বকর্মা পূজা করার পূর্বে

বিশ্বকর্মা পূজা হলো একটি মহৎ হিন্দু উৎসব এবং এটি বিশেষভাবে শিল্পকর্মীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে, তবে নিম্নলিখিত প্রধান ধারাগুলি এই পূজার মৌলিক উপায়গুলি:

প্রস্থান (স্থান প্রতিষ্ঠাপনা): বিশ্বকর্মা পূজা সম্প্রদায় বেশ সাধারণভাবে মন্দিরে বা শিল্পকর্মীদের কাজস্থলে আয়োজন করা হয়। এই স্থানে বিশ্বকর্মার মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং শ্রদ্ধায় পূজা করা হয়।

পূজা প্রস্তুতি (Preparation for Puja): পূজা প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় আইটেমগুলি যেমন ফুল, ফল, নীরজন সমর্পণ, অর্চনা সামগ্রী, ধূপ, দিয়া, সংগীতের উপাদান, এবং শিল্পকর্মীদের কাজের যন্ত্রপাতি সম্পর্কিত সামগ্রী তৈরি করা হয়।

পূজা অনুষ্ঠান (Puja Rituals): পূজা অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, যেখানে পূজার মূর্তির সামনে বিশেষ ধরনের পূজা প্রদর্শন করা হয়। এটি অর্চনা, ধূপের প্রজ্বলন, দিয়া জ্বলানো, প্রসাদের প্রদর্শন, ও শ্রদ্ধার্ঘ্য সম্পর্কিত হতে পারে।

পূজার প্রসাদ (Prasad Distribution): পূজার প্রসাদ বা প্রেমান্বিত আহার পূজার পরে সমস্ত উপস্থিতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

সংগীত ও নৃত্য (Music and Dance): বিশ্বকর্মা পূজা সময়ে সংগীত ও নৃত্যের আয়োজন করা হয়, যেখানে শিল্পকর্মীরা এবং অন্যান্য উপস্থিতদের সাথে একসাথে উৎসব উপভোগ করে।

এই পদ্ধতি বিশ্বকর্মা পূজা উৎসবের মৌলিক উপায় এবং এটি স্থানীয় সংক্ষেপে পরিপালিত হতে পারে। তবে, পূজা সময়ে বিশেষ ধরনের আচরণ এবং পূজা প্রসাদের প্রস্তুতি সাধারণভাবে অনুসরণ করা হয়।


বিশ্বকর্মা পুজা মন্ত্র


এই মন্ত্রগুলি বাংলা উচ্চারণে নিম্নলিখিত হতে পারে:

বিশ্বকর্মা প্রণামঃ
ওং যথাযথকৃতয যথাযথভুতিযে যথাযথভূতিপূর্তিযে যথাযথভূতিকরণায় সর্বজগতঃ শিল্পকর্তায় নমঃ।

বিশ্বকর্মা ধ্যানমঃ


ওং যথাযথকৃতয যথাযথভূতিযে যথাযথভূতিপূর্তিযে যথাযথভূতিকরণায় সর্বজগতঃ শিল্পকর্ত্ত্রে ধ্যানী নমঃ।

এই মন্ত্রগুলি পূজা অনুষ্ঠানে পড়ে শিল্পকর্মীরা বিশ্বকর্মা দেবতার সমর্পণ করে এবং তার কাজের সুরক্ষা এবং শুভ লাভ প্রাপ্তির জন্য প্রার্থনা করে। এই মন্ত্রগুলি পূজা অনুষ্ঠানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয় এবং বিশ্বকর্মা পূজা সময়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য মধ্যে ব্যবহৃত হয়।


বিশ্বকর্মা পূজা বিধি (সংক্ষিপ্ত)

আচমন
গরুর কানের ন্যায় হাতের তেলো করে, ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুলের গোড়ায় মাষকলাই ডুবতে পারে এমন পরিমাণ জল নিয়ে ‘ওঁ বিষ্ণু’ মন্ত্রে তিনবার জল পান করে,
হাত ধুয়ে হাত জোড় করে পাঠ করবে :
ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ
দিবীব চক্ষুরাততম্ ।
ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ ।
ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোহপি বা
যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।
গন্ধাদির অর্চনা-
‘ওঁ এতেভ্যো গন্ধাদিভ্যো নমঃ’ -মন্ত্রে পুষ্পপাত্রে সাজানো গন্ধ ও পুষ্পাদিতে জলের দ্বারা তিনবার প্রোক্ষণ ( চিৎ হাতে জলের ছিটা ) করবে।
পরে গন্ধপুষ্প নিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতেভ্যো গন্ধাদিভ্যো নমঃ’ বলে পুষ্পপাত্রে দিবে
অতঃপর হাতে এক একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে নিচের এক একটি মন্ত্র বলে বলে গন্ধপুষ্প তাম্রকুণ্ডে দিয়ে দিয়ে পূজা করবে-
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ’;
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎসম্প্রদানেভ্যঃ পূজনীয়দেবতাভ্যো নমঃ’;
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে শ্রীগুরবে নমঃ’;
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে গণেশাদিপঞ্চদেবতাভ্যো নমঃ’;।
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে নমো নারায়ণায় নমঃ’;
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে ব্রাহ্মণেভ্যো নমঃ’।
৩)সূর্যার্ঘ্য-
কুশীতে জল, রক্তপুষ্প, রক্তচন্দন, আতপ চাল, যব, তিল, সরিষা, কুশের অগ্র ও দুর্বা নিয়ে নিম্নোক্ত মন্ত্রে নিবেদন করবে : ‘ওঁ নমো বিবস্বতে ব্রহ্মন্ ভাস্বতে বিষ্ণুতেজসে।
জগৎসবিত্রে শুচয়ে সবিত্রে কর্মদায়িনে।
এষোহর্ঘ্যঃ শ্রীসূর্যায় নমঃ।।
এই অর্ঘ্যটি কপালে স্পর্শ করে সূর্যদেবের উদ্দ্যেশে তাম্রটাটে প্রদান করবে, তৎপরে কৃতাঞ্জলি হয়ে পাঠ করবে,
প্রনাম – ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্ ।ধান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্ ।
স্বস্তিবাচন-
তাম্রপাত্রে (কুশীতে) পুষ্প ও আতপ চাল নিয়ে বাম করতলে রেখে ডান হাতের করতল দিয়ে আচ্ছাদন করে পাঠ –
‘ওঁ কর্তব্যেহস্মিন্ গনেশাদি নানা দেবতা পূজা পূর্বক শ্রী বিশ্বকর্ম্মন পূজাকর্মণি ওঁ পুণ্যাহং ভবন্তো ব্রুবন্তু’।
পরে ‘ওঁ পুণ্যাহং’ তিনবার বলতে বলতে ঘণ্টাবাদনপূর্বক আতপ চাল ছড়াবে।
‘ওঁ কর্তব্যেহস্মিন্ গনেশাদি নানা দেবতা পূজা পূর্বক শ্রী বিশ্বকর্ম্মন পূজাকর্মণি ওঁ স্বস্তি ভবন্তো ব্রুবন্তু’।
পরে ‘ওঁ স্বস্তি’ তিনবার বলতে বলতে ঘণ্টাবাদনপূর্বক আতপ চাল ছড়াবে।
‘ওঁ কর্তব্যেহস্মিন্ গনেশাদি নানা দেবতা পক শ্রী বিশ্বকর্ম্মন পূজাকর্মণি ওঁ ঋদ্ধিং ভবন্তো ব্রুবন্তু’। পরে ‘ওঁ ঋদ্ধ্যতাম্’ তিনবার বলতে বলতে ঘণ্টাবাদনপূর্বক আতপ চাল ছড়াবে।
স্বস্তিসুক্ত(যজুর্বেদীয়)-
নিম্নোক্ত মন্ত্রপাঠ ও ঘণ্টাবাদনসহ আতপ চাল ছড়াবে।
ওঁ স্বস্তি ন ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্ববেদাঃ ।স্বস্তি নস্তার্ক্ষো অরিষ্টনেমিঃ স্বস্তি নো বৃহস্পতির্দধাতু।
ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি।
(অব্রাক্ষন গন ওঁ স্থলে নমঃ বলবে)
সঙ্কল্প-
তাম্রপাত্রে ( কুশীতে ) তিনটি কুশ, তিল, তুলসী, হরিতকী, গন্ধ, পুষ্প, আতপ চাল ও জল নিয়ে পূর্বমুখী ( বা উত্তরমুখী ) বসবে। বাম করতলে কুশী স্থাপন করে দক্ষিণ করতল দ্বারা আচ্ছাদনপূর্বক পাঠ করবে ।
“বিষ্ণুরোম্ তৎসদদ্য ভাদ্র মাসি অমুকপক্ষে অমুকতিথৌ ষড়শীতি সংক্রান্ত্যাং অমুক গোত্রস্য শ্রীঅমুকদেবশর্মা ( পরার্থে- অমুকগোত্রস্য অমুকদেবশর্মণঃ / দাসস্য) [অমুকগোত্রঃ শ্রীঅমুকঃ (যজমানের গোত্র ও নাম)]সিল্পনৈপুন্যাদি পূর্ব্বক-শ্রীবিশ্বকর্ম্ম প্রীতিকা গণপত্যাদি নানাদেবতা পুজাপূর্ব্বক শ্রীবিশ্বকর্ম্ম পূজাকর্ম অহং করিষ্যে
( পরার্থে- করিষ্যামি )।
পরে হাতের পাত্রটি ঈশান কোণে উপুড় করবে
সঙ্কল্পসূক্ত(যজুর্বেদীয়)-
নিম্নোক্ত মন্ত্রে পাত্রটির ওপর চাল ছড়াবে এবং ঘণ্টা বাজাবে-
ওঁ যজ্জাগ্রতো দূরমুদৈতি দৈবং তদু সুপ্তস্য তথৈবৈতি।
দূরঙ্গমং জ্যোতিষাং জ্যোতিরেকং তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু। ওঁ অস্য সঙ্কল্পিতার্থস্য সিদ্ধিরস্তু। ওঁ অয়মারম্ভ শুভায় ভবতু।।
ঘটস্থাপন-(যজুর্বেদীয়)
হাত জোড় করে পাঠ করবে,
ওঁ সর্বতীর্থোদ্ভবং বারি সর্বদেবসমন্বিতম।
ইমং ঘটং সমারুহ্য তিষ্ঠ তিষ্ঠ দেব গণৈঃ সহ।
ঘটস্পর্শ করে পাঠ করবে-
ওঁ স্থাং স্থীং স্থিরো ভব বিড্বঙ্গ আশুর্ভব বাজ্যর্ব্বন্ পৃথুর্ভব সুষদস্ত্বমগ্নেঃ পুরীষবাহণঃ।
অতঃপর ব্রাক্ষন গন বৈদিক গায়েত্রী পাঠ করবেন
সামান্যার্ঘ্যস্থাপন-
নিজের সামনে একটু বামদিকের ভূমিতে উর্ধমুখ ত্রিকোণ বৃত্ত ও চতুর্ভুজ মণ্ডল এঁকে তদুপরি পূজা করবে-
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে আধারশক্তাদিভ্যো নমঃ।
পরে ‘ফট্’ মন্ত্রে কোশা ধুয়ে মণ্ডলোপরি স্থাপন করে ‘নমঃ’ মন্ত্রে জলপূর্ণ করবে এবং ‘ওঁ’ মন্ত্রে কোশার অগ্রভাগে একটি অর্ঘ্য (বিল্বপত্র, গন্ধপুষ্প, দুর্বা ও আতপ চাল) সাজিয়ে দিবে। ‘ওঁ’ মন্ত্রে দূর্বা, অক্ষত বিল্বপত্র, চন্দন, পুষ্প, তুলসীপত্র, আতপ চাল কোশার জলে নিক্ষেপ করবে।
পরে অঙ্কুশ মুদ্রায় জল স্পর্শ করে নিম্নোক্ত মন্ত্রে সূর্যমণ্ডল হতে তীর্থ আবাহন করবে-
ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি।
নর্মদে সিন্ধু কাবেরি জলেহস্মিন্ সন্নিধিং কুরু।।
অতঃপর
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে তীর্থেভ্যো নমঃ’ মন্ত্রে জলে তীর্থপূজা করে
‘হূঁ’ মন্ত্রে অবগুণ্ঠন মুদ্রা ও
‘বং’ মন্ত্রে ধেনুমুদ্রা প্রদর্শনপূর্বক
মৎস্যমুদ্রায় জল আচ্ছাদন করে
১০ বার ‘ওঁ’ মন্ত্র জপ করবে
এরপর সামান্যার্ঘ্যের জল নিজের মাথায় ও দ্বারদেশে ছিটিয়ে দিয়ে দ্বারদেবতার পূজা করবে।
দ্বারদেবতাপূজা-
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে দ্বারদেবতাভ্যো নমঃ(নৈঋতকোণে);
তাম্রকুণ্ডে-
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে ব্রহ্মণে নমঃ;
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে বাস্তুপুরুষায় নমঃ
ভূতাপসারণ-
‘ওঁ অস্ত্রায় ফট্’ মন্ত্রে আতপ চালে সাতবার জপ করে তা ঘন্টাবাদন করতে করতে নিম্নোক্ত মন্ত্রে নারাচ মুদ্রায় (অঙ্গুষ্ঠ ও তর্জনী যোগে) চারদিকে ছড়াবে-
ওঁ সর্ববিঘ্নানুৎসারয় হূঁ ফট্ স্বাহা।
ওঁ অপসর্পন্তু তে ভূতা যে ভূতা ভুবি সংস্থিতাঃ।
যে ভূতা বিঘ্নকর্তারস্তে নশ্যন্তু শিবাজ্ঞয়া।।
আসনশুদ্ধি-
স্ববামে আসনের নিম্নবর্তী ভূমিতে ত্রিকোণ মণ্ডল এঁকে
‘ওঁ হ্রীঁ এতে গন্ধপুষ্পে আধারশক্ত্যাদিভ্যো নমঃ’ –মন্ত্রে গন্ধ পুষ্পে মণ্ডল পূজা করবে।
অতঃপর আসন স্পর্শ করে পাঠ করবে-
‘ওঁ অস্য আসনোপবেশনমন্ত্রস্য মেরুপৃষ্ঠ ঋষিঃ সুতলং ছন্দঃ কূর্মো দেবতা আসনোপবেশনে বিনিয়োগঃ’।
পরে কৃতাঞ্জলিপূর্বক পাঠ-
ওঁ পৃথ্বি ত্বয়া ধৃতা লোকা দেবি ত্বং বিষ্ণুনা ধৃতা।
ত্বঞ্চ ধারয় মাং নিত্যং পবিত্রং কুরু চাসনম্ ।।
অতঃপর আসনের উপর ত্রিকোণ মণ্ডল এঁকে
‘হ্রীঁ এতে গন্ধপুষ্পে আধারশক্তয়ে কমলাসনায় নমঃ’- মন্ত্রে ঐ মণ্ডল গন্ধপুষ্প দ্বারা পূজা করবে।
গুরুপ্রণাম-
হাত জোড় করে প্রণাম করবে।
বামকর্ণোর্ধ্বে- ঐঁ গুরুভ্যো নমঃ;
তদূর্ধ্বে- ঐঁ পরমগুরুভ্যো নমঃ;
তদূর্ধ্বে- ঐঁ পরাপরগুরুভ্যো নমঃ;
তদূর্ধ্বে- ঐঁ পরমেষ্ঠিগুরুভ্যো নমঃ; দক্ষিণকর্ণোর্ধ্বে- ওঁ গণেশায় নমঃ;
মধ্যে অর্থাৎ ললাটে বা হৃদয়ে –
ওঁ বাং বিশ্বকর্মনে নমঃ ।।
করশুদ্ধি-
‘হেঁসৌঃ’ মন্ত্রে একটি সচন্দন রক্তবর্ণ পুষ্প নিয়ে ‘আং হূং ফট্ স্বাহা’ মন্ত্রে উভয় করতল দিয়ে মর্দন করে
বাম হাতের
নারাচ মুদ্রায় সেই ফুলটিকে মাথার চারদিকে
‘ক্লীং’ মন্ত্রে ঘুরিয়ে
‘ঐং’ মন্ত্রে ঘ্রাণ নিয়ে ‘ফট্’ মন্ত্রে ঈশানকোণে নিক্ষেপ করবে।
পুষ্পশুদ্ধি-
‘ওঁ শতাভিষেক হূঁ ফট্ স্বাহা’ মন্ত্রে পুষ্পে জলের ছিটা দিয়ে
‘ওঁ পুষ্পে পুষ্পে মহাপুষ্পে সুপুষ্পে পুষ্পসম্ভবে পুষ্পচয়াবকীর্ণে চ হূঁ ফট্ স্বাহা’ মন্ত্রে পুষ্প স্পর্শ করে শোধন করবে।
ত্রিবিধ বিঘ্নাপসারণ ও দিগবন্ধন
দিব্যবিঘ্নাপসারণ-
‘ওঁ বাং’ মন্ত্র উচ্চারণ করে ঊর্ধ্বে দৃষ্টিপাতকরতঃ দিব্যবিঘ্নাপসারণ করবে।
দিগবন্ধন-
তারপর তর্জনী ও মধ্যমা দ্বারা বাম করতলে ঊর্ধ্ব ঊর্ধ্ব ক্রমে তালত্রয় দিয়ে দক্ষিণ হস্তের অঙ্গুষ্ঠ ও তর্জনী দ্বারা পূর্বদিক থেকে আরম্ভ করে ঈশানকোণ পর্যন্ত এবং অধঃ ও ঊর্ধ্ব- এই দশ দিকে ‘ফট্’ মন্ত্রে তুড়ি দিয়ে দিগবন্ধন করবে।
ভূমিবিঘ্ন-
তারপর ‘ফট্’ মন্ত্রে বামপায়ের গোড়ালি দ্বারা ভূমিতে তিনবার আঘাত করে ভূমিবিঘ্ন অপসারণ করবে।
অন্তরিক্ষবিঘ্ন-
‘অস্ত্রায় ফট্’ মন্ত্রে ঊর্ধ্বদিকে জলের ছিটা দিয়ে অন্তরিক্ষবিঘ্ন দূর করবে।
ভূতশুদ্ধি (সংক্ষিপ্ত)-
স্বক্রোড়ে বাম হাতের উপর ডান হাত চিৎভাবে স্থাপন করে নিম্নোক্ত মন্ত্র পাঠ করবে-
ওঁ ভূতশৃঙ্গাটাচ্ছিরঃ সুষুম্নাপথেন
জীবশিবং পরমশিবপদে যোজয়ামি স্বাহা ।।১।।
ওঁ যং লিঙ্গশরীরং শোষয় শোষয় স্বাহা ।।২।।
ওঁ রং সংঙ্কোচশরীরং দহ দহ স্বাহা ।।৩।।
ওঁ পরমশিব সুষুম্নাপথেন
মূলশৃঙ্গাটমুল্লসোল্লস জ্বল জ্বল প্রজ্বল প্রজ্বল
সোহহং হংসঃ স্বাহা ।।৪।।
এখানে, পূজক যে দেবতার পূজা করতে অগ্রসর, তিনি স্বয়ং সেই দেবতায় রূপান্তরিত হয়েছেন, এরূপ দৃঢ় ভাবনা করতে হবে।
ব্যাপকন্যাস-
‘ওঁ বাং ওঁ’ মাথা থেকে পায়ের আঙ্গুল এবং পায়ের আঙ্গুল থেকে মাথা পর্যন্ত উভয় হাত দ্বারা তিনবার মার্জনা করবে। এতদ্বারা নিজ শরীর, বাক্য ও মন শুদ্ধ হল বলে চিন্তা করবে।
মাতৃকান্যাস-
কৃতাঞ্জলি হয়ে পাঠ- ওঁ অস্য মাতৃকামন্ত্রস্য ব্রহ্ম ঋষির্গায়ত্রীচ্ছন্দো দেবী মাতৃকা সরস্বতী দেবতা, হলো বীজানি স্বরাঃ শক্তয়ঃ অব্যক্তং কীলকং সর্বাভীষ্টসিদ্ধয়ে লিপিন্যাসে বিনিয়োগঃ।
তত্ত্বমুদ্রায় স্পর্শ করে বলবে :
মস্তকে- ওঁ ব্রহ্মণে ঋষয়ে নমঃ;
মুখে- ওঁ গায়ত্রীচ্ছন্দসে নমঃ;
হৃদয়ে- ওঁ মাতৃকাসরস্বত্যৈ দেবতায়ৈ নমঃ; মূলাধারে- ওঁ হলভ্যো বীজেভ্যো নমঃ;
পাদদ্বয়ে- ওঁ স্বরেভ্যঃ শক্তিভ্যো নমঃ;
সর্বাঙ্গে- ওঁ অব্যক্তকীলকায় নমঃ।
করন্যাস-
উভয় হাতের তর্জনী সেই সেই হাতের অঙ্গুষ্ঠ-পৃষ্ঠে দিয়ে বলবে- অং কং খং গং ঘং ঙং আং অঙ্গুষ্ঠাভ্যাং নমঃ।
উভয় হাতের অঙ্গুষ্ঠ উভয় হাতের তর্জনীর পৃষ্ঠে দিয়ে পাঠ করবে- ইং চং ছং জং ঝং ঞং ঈং তর্জনীভ্যাং স্বাহা।
উভয় হাতের অঙ্গুষ্ঠ উভয় হাতের মধ্যমার পৃষ্ঠে দিয়ে পাঠ করবে- উং টং ঠং ডং ঢং ণং ঊং মধ্যমাভ্যাং বষট্ ।
উভয় হাতের অঙ্গুষ্ঠ উভয় হাতের অনামিকার পৃষ্ঠে রেখে পাঠ করবে- এং তং থং দং ধং নং ঐং অনামিকাভ্যাং হূঁ ।
উভয় হাতের অঙ্গুষ্ঠ উভয় হাতের কনিষ্ঠার পৃষ্ঠে দিয়ে পাঠ করবে- ওং পং ফং বং ভং মং ঔং কনিষ্ঠাভ্যাং বৌষট্।
অং যং রং লং বং শং ষং সং হং লং ক্ষং অঃ করতলপৃষ্ঠাভ্যাং অস্ত্রায় ফট্- এই মন্ত্র পাঠ করে ডান হাতের যুক্ত তর্জনী ও মধ্যমা দ্বারা বাম হাতের তল ও পৃষ্ঠ স্পর্শ করে বাম করতলে তালি দিবে।
অঙ্গন্যাস-
ডান হাতের তর্জনী, মধ্যমা ও অনামিকার অগ্রভাগ দ্বারা বক্ষঃস্থল স্পর্শ করে পাঠ করবে- অং কং খং গং ঘং ঙং আং হৃদয়ায় নমঃ।
ইং চং ছং জং ঝং ঞং ঈং শিরসে স্বাহা- মন্ত্রে তর্জনী ও মধ্যমার অগ্রভাগ দ্বারা মস্তক;
উং টং ঠং ডং ঢং ণং ঊং শিখায়ৈ বষট্- মন্ত্রে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের দ্বারা শিখা;
এং তং থং দং ধং নং ঐং কবচায় হূঁ- মন্ত্রে ডান হাতের পঞ্চাঙ্গুলির অগ্রভাগ দ্বারা বাম বাহুমূল এবং বাম হাতের পঞ্চাঙ্গুলির অগ্রভাগ দ্বারা ডান বাহুমূল;
ওং পং ফং বং ভং মং ঔং নেত্রত্রয়ায় বৌষট্- মন্ত্রে তর্জনী, মধ্যমা ও অনামিকার অগ্রভাগ দ্বারা যথাক্রমে দক্ষিণ নেত্র, ঊর্ধ্ব নেত্র (নাসামূল) ও বাম নেত্র স্পর্শ করবে।
অং যং রং লং বং শং ষং সং হং লং ক্ষং অঃ করতলপৃষ্ঠাভ্যাং অস্ত্রায় ফট্- মন্ত্রে ডান হাতের যুক্ত তর্জনী ও মধ্যমা দ্বারা বাম হাতের তল ও পৃষ্ঠ স্পর্শ করে বাম করতলে তালি দিবে।
গুর্বাদিপূজা-
গুরু ও গণেশাদি পঞ্চদেবতার পূজা নিম্নোক্ত মন্ত্রে গন্ধপুষ্পে করা যেতে পারে।
সমস্ত পূজাই সন্মুখবর্তী তাম্রকুণ্ডস্থ জলে করবে।
ওঁ ঐঁ এতে গন্ধপুষ্পে শ্রীগুরবে নমঃ।
ওঁ গং এতে গন্ধপুষ্পে শ্রীগণেশায় নমঃ।
ওঁ নমঃ শিবায় এতে গন্ধপুষ্পে শিবায় নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে শ্রীসূর্যায় নমঃ।
ওঁ নমো নারায়ণায় এতে গন্ধপুষ্পে নারায়ণায় নমঃ।
ওঁ হ্রীঁ এতে গন্ধপুষ্পে শ্রীজয়দুর্গায়ৈ নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে আদিত্যাদি-নবগ্রহেভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে ইন্দ্রাদি-দশদিকপালেভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে কাল্যাদি-দশমহাবিদ্যাভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে মৎস্যাদি-দশাবতারেভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে সর্বেভ্যো দেবেভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে সর্বাভ্যো দেবীভ্যো নমঃ।
পীঠন্যাস-
মৃগমুদ্রায় বক্ষস্থল স্পর্শ করে বলবে-
ওঁ পীঠদেবতাভ্যো নমঃ;
ওঁ পীঠশক্তিভ্যো নমঃ। ।
করন্যাস-
(স্পর্শ প্রভৃতি পূর্বোক্ত করন্যাসের অনুরূপ)
বাং অঙ্গুষ্ঠাভ্যাং নমঃ;
বীং তর্জনীভ্যাং স্বাহা;
বূং মধ্যমাভ্যাং বষট্;
বৈং অনামিকাভ্যাং হূং;
বৌং কনিষ্ঠাভ্যাং বৌষট্;
বঃ করতল পৃষ্ঠাভ্যাম্ অস্ত্রায় ফট্।
অঙ্গন্যাস-
(স্পর্শ প্রভৃতি পূর্বোক্ত অঙ্গন্যাসের অনুরূপ)
বাং হৃদয়ায় নমঃ;
বীং শিরসে স্বাহা;
বূং শিখায়ৈ বষট্;
বৈং কবচায় হূং;
বৌং নেত্রাভ্যাং বৌষট্;
বঃ করতল পৃষ্ঠাভ্যাম্ অস্ত্রায় ফট্।
ব্যাপকন্যাস-
ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ- মন্ত্রে পাঁচবার দুই হাতে মাথা থেকে পা পর্যন্ত এবং পা থেকে মাথা পর্যন্ত মার্জনা করবে।
শ্রী বিশ্বকর্মার ধ্যান-
কূর্মমুদ্রায় হাতে ফুল নিয়ে হৃদয়ে জ্যোতির্ময় মূর্তি ভাবনাপূর্বক ধ্যান করবে-
‘ওঁ বিশ্বকর্মন্ মহাভাগ সুচিত্রকর্মকারক্ ।
বিশ্বকৃৎ বিশ্বধৃক্ ত্বঞ্চ রসনামানদণ্ডধৃক্ ।।’
ধ্যানান্তে হাতের ফুল মাথায় স্থাপন করবে।
মানসপূজা-
কোলে বাম করতলের উপর দক্ষিণ করপৃষ্ঠ রেখে মানস উপচারে পূজা করবে।
হৃদয়কেই দেবতার আসন কল্পনা করে সেখানে তাঁর আবাহন করবে।
অতঃপর সহস্রদলকমল-নিঃসৃত সুধারূপ পাদ্য, মনোরূপ অর্ঘ্য, পূর্বোক্ত সুধারূপ আচমনীয় ও স্নানীয়, আকাশতত্ত্বরূপ বসন, ক্ষিতিতত্ত্বরূপ গন্ধ, চিত্তরূপ পুষ্প, প্রাণরূপ ধূপ, তেজস্তত্ত্বরূপ দীপ, সুধাসমুদ্ররূপ নৈবেদ্য মনে মনে প্রদান করবে।
বিশেষার্ঘ্য স্থাপন-
যারা ঘটে পুজো করবেন তাদের প্রয়োজন নেই।।
পূজক নিজের সামনে কোশার বাম দিকে একটি ঊর্ধ্বমুখ ত্রিকোণ, তার বাইরে
বৃত্ত ও তার বাইরে চতুষ্কোণ মণ্ডল এঁকে সামান্যার্ঘ্যের জল দ্বারা প্রোক্ষণ করবে এবং
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে আধারশক্তয়ে নমঃ’
মন্ত্রে মণ্ডল গন্ধপুষ্পে পূজা করবে।
মণ্ডলের উপর ত্রিপদিকা স্থাপন করে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে মং বহ্নিমণ্ডলায় দশকলাত্মনে নমঃ’ মন্ত্রে ত্রিপদিকায় গন্ধপুষ্পেপূজা করবে।
‘হূঁ ফট্’ মন্ত্রে শঙ্খ ধুয়ে ত্রিপদিকার উপর রেখে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে অং অর্কমণ্ডলায় দ্বাদশকলাত্মনে নমঃ’ মন্ত্রে গন্ধপুষ্পে
পূজা করবে।
পরে ‘ বাং ‘ মন্ত্র উচ্চারণ করে শঙ্খের তিনভাগ জল দ্বারা পূর্ণ করবে
এবং ‘নমঃ’ মন্ত্রে গন্ধপুষ্প, দুর্বা ও আতপ তণ্ডুল দিয়ে অর্ঘ্য রচনা করে তদুপরি স্থাপন করবে
অতঃপর
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে উং সোমমণ্ডলায় ষোড়শকলাত্মনে নমঃ’ মন্ত্রে অর্ঘ্য জলে গন্ধপুষ্পে পূজা করবে।
পরে অঙ্কুশ মুদ্রায় ঐ জল স্পর্শ করে ‘ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি নর্মদে সিন্ধুকাবেরি জলেহস্মিন্ সন্নিধিং কুরু’ মন্ত্রে সূর্যমণ্ডল থেকে তীর্থ আবাহন করবে এবং
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে তীর্থেভ্যো নমঃ’ মন্ত্রে গন্ধপুষ্পে জলে তীর্থ পূজা করবে।
পরে ‘বষট্’ মন্ত্রে গালিনী মুদ্রা দেখিয়ে পূজা করবে- ‘ওঁ বাং এতে গন্ধপুষ্পে বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’।
অতঃপর আবাহন্যাদি পঞ্চমুদ্রা দেখিয়ে শঙ্খে দেবতার আবাহন করবে-
‘ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে ইহাগচ্ছ ইহাগচ্ছ (আবাহনী মুদ্রা দ্বারা); ইহ তিষ্ঠ ইহ তিষ্ঠ (স্থাপনী মুদ্রা দ্বারা); ইহ সন্নিধেহি ইহ সন্নিধেহি (সন্নিধাপনী মুদ্রা দ্বারা); ইহ সন্নিরুধ্যস্ব ইহ সন্নিরুধ্যস্ব (সংরোধনী মুদ্রা দ্বারা); ইহ সম্মুখী ভব ইহ সম্মুখী ভব (সম্মুখীকরণ মুদ্রা দ্বারা) অত্রাধিষ্ঠানং কুরু, মম পূজাং গৃহাণ’ (করজোড়ে) বলবে।
পরে ‘ওঁ বাং এতে গন্ধপুষ্পে বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’ মন্ত্রে গন্ধপুষ্প দ্বারা পূজা করে
মৎস্যমুদ্রায় আচ্ছাদনপূর্বক ‘ওঁ’ মন্ত্র দশবার জপ করবে।
তারপর বাম করতলে দক্ষিণ হস্তের তর্জনী ও মধ্যমা যোগে ‘ফট্’ মন্ত্রে ঊর্ধ্বোর্ধ্বে তালত্রয় দিয়ে ধেনু, যোনি ও পরমীকরণ মুদ্রা প্রদর্শন করবে।
শঙ্খ কাৎ করে কিঞ্চিৎ জল কুশীতে ঢেলে সেই জল ‘ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’ মন্ত্রে নিজের মাথায় ও পূজাদ্রব্যে ছিটিয়ে দিবে।
পীঠপূজা-
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে পীঠদেবতাভ্যো নমঃ;
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে পীঠশক্তিভ্যো নমঃ’ মন্ত্রে তাম্রকুণ্ডে গন্ধপুষ্পে পূজা করবে।
পুনরায় করন্যাস, অঙ্গন্যাস প্রভৃতি---
করন্যাস-
(স্পর্শ প্রভৃতি পূর্বোক্ত করন্যাসের অনুরূপ)
বাং অঙ্গুষ্ঠাভ্যাং নমঃ;
বীং তর্জনীভ্যাং স্বাহা;
বূং মধ্যমাভ্যাং বষট্;
বৈং অনামিকাভ্যাং হূং;
বৌং কনিষ্ঠাভ্যাং বৌষট্;
বঃ করতল পৃষ্ঠাভ্যাম্ অস্ত্রায় ফট্।
অঙ্গন্যাস-
(স্পর্শ প্রভৃতি পূর্বোক্ত অঙ্গন্যাসের অনুরূপ)
বাং হৃদয়ায় নমঃ;
বীং শিরসে স্বাহা;
বূং শিখায়ৈ বষট্;
বৈং কবচায় হূং;
বৌং নেত্রাভ্যাং বৌষট্;
বঃ করতল পৃষ্ঠাভ্যাম্ অস্ত্রায় ফট্।
ব্যাপকন্যাস-
ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ- মন্ত্রে পাঁচবার দুই হাতে মাথা থেকে পা পর্যন্ত এবং পা থেকে মাথা পর্যন্ত মার্জনা করবে।
শ্রী বিশ্বকর্মার ধ্যান-
কূর্মমুদ্রায় হাতে ফুল নিয়ে হৃদয়ে জ্যোতির্ময় মূর্তি ভাবনাপূর্বক ধ্যান করবে-
‘ওঁ বিশ্বকর্মন্ মহাভাগ সুচিত্রকর্মকারক্ ।
বিশ্বকৃৎ বিশ্বধৃক্ ত্বঞ্চ রসনামানদণ্ডধৃক্ ।।’
ধ্যানান্তে হৃদয়স্থ অষ্টদলপদ্মের দেবতার জ্যোতির্ময় মূর্তি হস্তস্থিত পুষ্পে আবির্ভূত ভাবনা করে সেই পুষ্প তাম্রকুণ্ডে বা পূজাধারে স্থাপন করবে।
[ এখন অপ্রতিষ্ঠিত মূর্তি বা পট হলে সেই মূর্তিতে বা পটে এবং ঘটে পূজা হলে ঘটে আবাহন করতে হবে।]
আবাহন-
আবাহন্যাদি পঞ্চমুদ্রায় আবাহন করবে-
‘ওঁ বাং শ্রী বিশ্বকর্ম্মনে ইহাগচ্ছ ইহাগচ্ছ (আবাহনী মুদ্রা দ্বারা); ইহ তিষ্ঠ ইহ তিষ্ঠ (স্থাপনী মুদ্রা দ্বারা); ইহ সন্নিধেহি ইহ সন্নিধেহি (সন্নিধাপনী মুদ্রা দ্বারা); ইহ সন্নিরুধ্যস্ব ইহ সন্নিরুধ্যস্ব (সংরোধনী মুদ্রা দ্বারা); ইহ সম্মুখী ভব ইহ সম্মুখী ভব (সম্মুখীকরণ মুদ্রা দ্বারা) অত্রাধিষ্ঠানং কুরু, মম পূজাং গৃহাণ’ (করজোড়ে)। অতঃপর ‘হূং’ মন্ত্রে মূর্তিতে বা পটে বা ঘটে অবগুণ্ঠন মুদ্রা দেখিয়ে দেবতার অঙ্গে ষড়াঙ্গন্যাস করতে হবে।
ষড়াঙ্গন্যাস-
প্রতিমায় পুজো হলে এটি করতে হবে। ঘট পুজোতে প্রয়োজন নেই।
এক একটি ফুল নিয়ে
বাং হৃদয়ায় নমঃ;
বীং শিরসে স্বাহা;
বূং শিখায়ৈ বষট্;
বৈং কবচায় হূং;
বৌং নেত্রাভ্যাং বৌষট্;
বঃ করতল পৃষ্ঠাভ্যাম্ অস্ত্রায় ফট্।
ইত্যাদি ক্রমে দেবতার অঙ্গে নিক্ষেপ করতে হবে।
পরে ধেনু মুদ্রা ও পরমীকরণ মুদ্রা প্রদর্শন করবে।
[অপ্রতিষ্ঠিত মূর্তি বা পটে পূজা হলে এখন চক্ষুদান ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ঘটে বা শালগ্রামে পূজা হলে এর দরকার নেই।]
চক্ষুদান-
ঘৃত দ্বারা একটি বিল্বপত্রে কাজল প্রস্তুত করে আর একটি বিল্বপত্রের বোঁটা দ্বারা সেই কাজল নিয়ে
‘ওঁ শিল্পাচার্য্যায় দেবায় নমস্তে বিশ্বকর্ম্মনে স্বাহা–
এই গায়ত্রী মন্ত্র পাঠপূর্বক প্রথমে ঊর্ধ্বনেত্রে পরে দক্ষিণ নেত্রের অতঃপর বামনেত্রে মণিতে দিয়ে চক্ষুদান করবে।
গজের চক্ষুদান-
গায়ত্রী মন্ত্র পাঠপূর্বক দক্ষিণ নেত্রের অতঃপর বামনেত্রে মণিতে দিয়ে চক্ষুদান করবে।
প্রাণ প্রতিষ্ঠা-
কুশপুষ্পযুক্ত হস্ত প্রতিমার মস্তকে স্থাপনপূর্বক ১০৮ বার মূলমন্ত্র (ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ) জপ করে
হৃদয় ধরে পাঠ করবে এবং বাম হাতে ঘন্টাধ্বনি করবে-
ওঁ আং হ্রীঁ ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌঁ হংসঃ অস্যা শ্রী বিশ্বকর্ম্মন প্রাণা ইহ প্রাণাঃ।
ওঁ আং হ্রীঁ ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌঁ হংসঃ অস্যা শ্রী বিশ্বকর্ম্মন জীব ইহ স্থিতঃ।
ওঁ আং হ্রীঁ ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌঁ হংসঃ অস্যা শ্রী বিশ্বকর্ম্মন সর্বেন্দ্রিয়াণি।
ওঁ আং হ্রীঁ ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌঁ হংসঃ অস্যা শ্রী বিশ্বকর্ম্মন বাঙ্ মনশ্চক্ষুস্ত্বক-শ্রোত্র-ঘ্রাণপ্রাণা ইহাগত্য সুখং চিরং তিষ্ঠন্তু স্বাহা।
এইবার লেলিহান মুদ্রায় দূর্বা ও আতপ তণ্ডুল নিয়ে দেবতার হৃদয় স্পর্শ করে বলবে-
ওঁ অস্যৈ প্রাণাঃ প্রতিষ্ঠন্তু অস্যৈ প্রাণাঃ ক্ষরন্তু চ। অস্যৈ দেবত্বসংখ্যায়ৈ স্বাহা।
ওঁ মনোজূতির্জুষতামাজ্যস্য বৃহস্পতির্যজ্ঞমিমং তনোত্বরিষ্টং যজ্ঞং সমিমং দধাতু বিশ্বেদেবাস ইহ মাদয়ন্তামোং প্রতিষ্ঠা।
গজের প্রাণ প্রতিষ্ঠা-
হৃদয় ধরে পাঠ করবে এবং বাম হাতে ঘন্টাধ্বনি করবে-
ওঁ আং হ্রীঁ ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌঁ হংসঃ অস্যা গজঃ প্রাণা ইহ প্রাণাঃ।
ওঁ আং হ্রীঁ ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌঁ হংসঃ অস্যা গজঃ জীব ইহ স্থিতঃ।
ওঁ আং হ্রীঁ ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌঁ হংসঃ অস্যা গজঃ সর্বেন্দ্রিয়াণি।
ওঁ আং হ্রীঁ ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌঁ হংসঃ অস্যা গজঃ বাঙ্ মনশ্চক্ষুস্ত্বক-শ্রোত্র-ঘ্রাণপ্রাণা ইহাগত্য সুখং চিরং তিষ্ঠন্তু স্বাহা।
এইবার লেলিহান মুদ্রায় দূর্বা ও আতপ তণ্ডুল নিয়ে দেবতার হৃদয় স্পর্শ করে বলবে-
ওঁ অস্যৈ প্রাণাঃ প্রতিষ্ঠন্তু অস্যৈ প্রাণাঃ ক্ষরন্তু চ। অস্যৈ গজত্বসংখ্যায়ৈ স্বাহা।
ওঁ মনোজূতির্জুষতামাজ্যস্য বৃহস্পতির্যজ্ঞমিমং তনোত্বরিষ্টং যজ্ঞং সমিমং দধাতু বিশ্বেদেবাস ইহ মাদয়ন্তামোং প্রতিষ্ঠা।
প্রধান পূজা
শ্রী বিশ্বকর্মার ধ্যান-
কূর্মমুদ্রায় হাতে ফুল নিয়ে হৃদয়ে জ্যোতির্ময় মূর্তি ভাবনাপূর্বক ধ্যান করবে-
‘ওঁ বিশ্বকর্মন্ মহাভাগ সুচিত্রকর্মকারক্ ।
বিশ্বকৃৎ বিশ্বধৃক্ ত্বঞ্চ রসনামানদণ্ডধৃক্ ।।
ধ্যান করে ফুল টি ঘটে দিবে।
পরে যথাশক্তি উপচারে পূজা করবে।
প্রতিমা হলৈ ষোড়শ উপাচারে ঘটে পুজো হলে সংক্ষিপ্ত দশোপচারে
ঘটে পুজো হলে সংক্ষিপ্ত দশোপচার বিধি
কুশীতে জল লইয়া - এতৎ পাদ্যং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ ’ মন্ত্রে দেবতার চরণযুগলের উদ্দেশে অর্পণ করবে।
কুশীতে জল তিল দুর্বা আতপচাল ইত্যাদি লইয়া- এষঃ অর্ঘ্য ওঁ বাং বিশ্বকর্মনে নমঃ
কুশীতে জল লইয়া- ইদম আচমনীয়োদকম ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ।
কুশীতে জল লইয়া - ইদম স্নানীয়োদকায় দকম ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ।
চন্দন লইয়া - এষঃ গন্ধঃ ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ।
অনেকগুলি পুষ্প লইয়া- এতানি পুষ্পানি ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ।
বিল্বপত্র লইয়া - ইদং সচন্দন বিল্বপত্রম ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ।
এষঃ ধূপ ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ । ধুপে জলের ছিটা দেবে
এষঃ দীপ ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ।দীপে জলের ছিটা দেবে ।
নৈবেদ্য নিবেদন :-
যথা বিধি অর্চনা করে নিবেদন করা হয় যারা পুজো শিখেছেন তার সংক্ষিপ্ত ভাবে নিবেদন করবেন
ইদং সোপকরন নৈবেদ্য ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ ।
নৈবেদ্যে জলের ছিটা দেবে ।
পানার্থ জল- এতদ পানার্থোদকম ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ ।
কুশীতে জল লইয়া ইদম পুনরাচমনীয়ম ওঁ বিং বিশ্বকর্মনে নমঃ ।
প্রতিমা পুজোর বিস্তারিত ষোড়শ উপাচার পুজো বিধি:-
আসনাদি উপাচারেভ্য নমঃ ইত্যাদি বলে একবারে অর্চনা করলে পুজো সংক্ষিপ্ত হবে অথবা পৃথক পৃথক ভাবে অর্চানান্তে নিবেদন করব
১. আসন- অর্চনা ,
আসন (রৌপ্য বা বস্ত্রাদি নির্মিত হতে পারে) সামনের কোন পাত্রে রেখে,
‘বং এতস্মৈ রজতাসনায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে রজতাসনায় নমঃ, মন্ত্রে আসনের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে।
এইভাবে সকল উপচার এক এক করে অর্চনা করে নিবেদন করবে।
তারপর হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ আসনং গৃহ্ন দেবেশ সদা বিজয় বর্দ্ধণ ।
ত্রায়স্ব মে মহাদেব দীব্যস্থানঞ্চ দেহিমে ॥
তারপর ‘ ইদং রজতাসনং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ ’ মন্ত্রে প্রদান করবে।
২. স্বাগত (করজোড়ে বলবে)-
ওঁ যস্যা দর্শনমিচ্ছন্তি দেবাঃ স্বাভীষ্টসিদ্ধয়ে ।
তস্যৈ তে পরমেশায় স্বাগতং স্বাগতঞ্চ মে ।।
ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে স্বাগতং সুস্বাগতয় তে ।
৩. পাদ্য- অর্চনা
কুশীতে বা অন্যপাত্রে সামান্যার্ঘ্য জল নিয়ে তাতে অগুরু, চন্দন , ফুল দিবে এবং আধারের উপর স্থাপন করে অর্চনা করবে।
বং এতস্মৈ পাদ্য জলায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে পাদ্য জলায় নমঃ, মন্ত্রে পাদ্য জলের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে।
পরে করজোড়ে পাঠ করবে—
ওঁ যদ্ ভক্তিলেশ সর্ম্পকাৎ পরমানন্দসংপ্লবঃ ।
তষ্মৈ তে পরমেশান পাদ্যং শুদ্ধায় কল্পয়ে ॥
তারপর ‘ এতৎ পাদ্যং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ ’ মন্ত্রে দেবতার চরণযুগলের উদ্দেশে অর্পণ করবে।
৪. অর্ঘ্য- অর্চনা-
পূর্বস্থাপিত বিশেষার্ঘ্য (এর ওপর অর্ঘ্য রেখে) অর্চনা করবে-
বং এতস্মৈ অর্ঘ্যায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে অর্ঘ্যায় নমঃ, মন্ত্রে অর্ঘ্যর ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
করজোড়ে পাঠ করবে-
ওঁ দুর্ব্বাক্ষত সমাযুক্তং বিল্বপত্রং তথাপরম্।
শোভনং শঙ্খপাত্রস্থং গৃহাণার্ঘ্যং সুরেশ্বর ॥
ওঁ তাপত্রয়হরং দিব্যং পরমানন্দলক্ষণম্ ।
তাপত্রয়বিমোক্ষায় তবার্ঘ্যং কল্পয়াম্যহম্ ।।
তারপর ‘ এষোহর্ঘ্যঃ ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ ’ মন্ত্রে ঘন্টাধ্বনি সহযোগে দেবতার মস্তকে দিবে।
৫. আচমনীয়- অর্চনা-
কুশীতে বা অন্যপাত্রে সামান্যার্ঘ্য জল নিয়ে তাতে অগুরু, চন্দন, ফুল দিবে এবং আধারের উপর স্থাপন করে অর্চনা করবে।
বং এতস্মৈ আচমনীয়োদকায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে আচমনীয়োদকায় নমঃ, মন্ত্রে আচমনীয়তে গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
পরে করজোড়ে পাঠ করবে—
ওঁ যদুচ্ছিষ্টমপস্পৃষ্টং শুদ্ধিমেত্যখিল জগৎ।
তস্মৈমুখারবিন্দায় আচমনং কল্পয়ামি তে ॥
তারপর ‘ ইদমাচমনীয়োদকং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’ এইমন্ত্রে দেবতার মুখারবিন্দের উদ্দেশে অর্পণ করবে।
৬. মধুপর্ক- অর্চনা-
কাঁসার বা রৌপ্য পাত্রে সমপরিমাণ দই, ঘি, মধু ও চিনি মিশ্রিত করে অল্প জল দিবে। মধুর পরিমাণ অধিক থাকবে। পূর্ববৎ অর্চনা করবে
বং এতস্মৈ মধুপর্কায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে মধুপর্কায় নমঃ, মন্ত্রে মধুপর্কের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ তাপত্রয়বিনাশার্থম অখন্ডানন্দহেতবে ।
মধুপর্কং দদামাদ্য প্রসিদ ভক্তবৎসল ॥
তারপর ‘এষ মধুপর্কং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’ এইমন্ত্রে দেবতার মুখারবিন্দের উদ্দেশে অর্পণ করবে।
৭. পুনরাচমনীয়- অর্চনা-
কুশীতে বা অন্যপাত্রে সামান্যার্ঘ্য জল নিয়ে তাতে অগুরু, চন্দন, ফুল দিবে এবং আধারের উপর স্থাপন করে অর্চনা করবে।
বং এতস্মৈ পুনরাচমনীয়োদকায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে পুনরাচমনীয়োদকায় নমঃ, মন্ত্রে পুনরাচমনীয়তে গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ উচ্ছিষ্টমপ্যশুচির্বা যস্য স্মরণমাত্রতঃ ।
শুদ্ধিমাপ্নোতি তস্মৈ তে পুনরাচমনীয়কম্ ।।
তারপর ‘ ইদং পুনরাচমনীয়োদকং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’ মন্ত্রে দেবতার মুখারবিন্দের উদ্দেশে অর্পণ করবে।
৮. গন্ধতৈল- অর্চনা-
একটি পাত্রে বা কুশীতে গন্ধতৈল নিয়ে পূর্ববৎ অর্চনা-
বং এতস্মৈ গন্ধতৈলং নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে গন্ধতৈলং নমঃ, মন্ত্রে গন্ধতৈলতে গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ স্নেহং গৃহাণ স্নেহেন লোকানাং হিতকারিণি ।
সর্বলোকেষু শুদ্ধ ত্বং দদামি স্নেহমুত্তমম্ ।।
তারপর
‘ ইদং গন্ধতৈলং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নিবেদয়ামি’ এইমন্ত্রে প্রদান করবে।
৯. স্নানীয়-অর্চনা-
ভৃঙ্গারাদি পাত্রে বা কুশীতে সুরভিদ্রব্যমিশ্রিত জল নিয়ে তাতে সচন্দন পুষ্প, অগুরু দিবে এবং আধারের উপর স্থাপন করে অর্চনা করবে।
বং এতস্মৈ স্নানীয়োদকায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে স্নানীয়োদকায় নমঃ, মন্ত্রে স্নানীয়তে গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ জলঞ্চ শীতলং স্বচ্ছমিদংশুদ্ধং মনোহরম্ ।
স্নানার্থং তে ময়া ভক্ত্যা কল্পিতং প্রতিগৃহ্যতাম্ ।।
তারপর ‘ ইদং স্নানীয়োদকং বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’ এইমন্ত্রে বানেস্বর উপস্থিত থাকলে তাঁর ওপরে অথবা দর্পণের ওপরে স্নানীয় নিবেদন করবে।
১০. বস্ত্র-অর্চনা-
সাধ্যমত উত্তম কার্পাস বস্ত্র আধারে স্থাপন করে অর্চনা করবে।
বং এতস্মৈ বস্ত্রায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে বস্ত্রায় নমঃ, মন্ত্রে বস্ত্রের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ মায়াচিত্র পটাচ্ছিন্ন নিজ গুহ্যোরুতেজসে । নিরাবরণবিঞ্জায় বাসস্তে কল্পয়াম্যাহম ॥
অতঃপর
‘ইদং বস্ত্রং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নিবেদয়ামি’ এইমন্ত্রে নিবেদন করবে।
১১. উপবিত-অর্চনা-
সাধ্যমত উত্তম উপবিত আধারে স্থাপন করে অর্চনা করবে।
বং এতস্মৈ উপবিতায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে উপবিতায় নমঃ, মন্ত্রে উপবিতের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ নবভিস্তন্তুভির্যুক্তং ত্রিগুনং দেবতাময়ং।
উপবিতং ময়া দত্তং গৃহাণ পরমেশ্বর ॥
অতঃপর
‘ইদং উপবিতং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নিবেদয়ামি’ এইমন্ত্রে নিবেদন করবে।
১২. উত্তরীয়-অর্চনা-
সাধ্যমত উত্তম উত্তরীয়বস্ত্র আধারে স্থাপন করে অর্চনা করবে।
বং এতস্মৈ উত্তরীয়বস্ত্রায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে উত্তরীয়বস্ত্রায় নমঃ, মন্ত্রে উত্তরীয়বস্ত্র-এর ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ যমাশ্রিত্য মহামায়া জগৎসম্মহিনী সদা।
তস্মৈ তে পরমেশায় কল্পয়াম্যুত্তরিয়কম ॥
অতঃপর
‘ইদং উত্তরীয়বস্ত্রং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নিবেদয়ামি’ এইমন্ত্রে নিবেদন করবে।
১৩. আভরণ-অর্চনা-
সাধ্যমত উত্তম আভরণ আধারে স্থাপন করে অর্চনা করবে।
বং এতস্মৈ আভরণায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে আভরণায় নমঃ, মন্ত্রে আভরনের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ স্বভাবসুন্দরাঙ্গায় নানাশক্ত্যাশ্রয়ায় তে ।
ভূষণাণি বিচিত্রানি কল্পয়াম্যয়রার্চিত ।।
অতঃপর
‘ইদং আভরণং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নিবেদয়ামি’ এইমন্ত্রে নিবেদন করবে।
১৪. গন্ধ— অর্চনা-
কোন পাত্রে বা বেলপাতায় চন্দন, অগুরু ও সুবাসিত অন্যান্য গন্ধদ্রব্য একত্রে নিয়ে অর্চনা করবে
বং এতস্মৈ গন্ধায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে গন্ধায় নমঃ, মন্ত্রে গন্ধ দ্রব্যের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ পরমানন্দসৌরভ্যপরিপূর্ণদিগন্তরম্ ।
গৃহাণ পরমং গন্ধং কৃপয়া পরমেশ্বর।।
অতঃপর
‘ এষ গন্ধঃ ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নিবেদয়ামি’ এইমন্ত্রে নিবেদন করবে।
১৫. পুষ্প— অর্চনা-
নানাবিধ পাঁচটি সদ্য ফোটা ফুল (পচা, বাসি, দলিত, পোকাখাওয়া বাদে) চন্দন মিশিয়ে অর্চনা করবে—
বং এতস্মৈ পুষ্পায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে পুষ্পায় নমঃ, মন্ত্রে পুষ্পের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ পুষ্পং মনোহরং দিব্যং সুগন্ধি দেবনির্মিতম্ ।
হৃদ্যমদ্ভুতমাঘ্রেয়ং দেবি দত্তং প্রগৃহ্যতাম্
অতঃপর
‘ ইদং সচন্দনপুষ্পং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
এইমন্ত্রে নিবেদন করে জ্ঞানমুদ্রায় (তর্জনী—অঙ্গুষ্ঠ যোগে) অর্পন করবে ও দেবতাকে সাজিয়ে দিবে ।
১৬. বিল্বপত্র— অর্চনা-
পাঁচটি সচন্দন নিখুঁত বিল্বপত্র আধারোপরি রেখে অর্চনা করবে—
‘বং এতস্মৈ বিল্বপত্রায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে বিল্বপত্রায় নমঃ, মন্ত্রে বিল্বপত্রের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
হাতজোড় করে পাঠ করবে-
ওঁ অমৃতোদ্ভবং শ্রীবৃক্ষং শঙ্করস্য সদাপ্রিয়ম্ ।
বিল্বপত্রং প্রযচ্ছামি পবিত্রং তে সুরেশ্বর।।
তারপর ‘ ইদং সচন্দনবিল্বপত্রং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’ এইমন্ত্রে নিবেদন করে জ্ঞানমুদ্রায় (তর্জনী—অঙ্গুষ্ঠ যোগে) অর্পন করবে ।
১৭. পুষ্পমাল্য—অর্চনা-
আধারে স্থাপনপূর্বক চন্দনাদি দিয়ে অর্চনা করে পাঠ করবে—
‘বং এতস্মৈ পুষ্পমাল্যায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে পুষ্পমাল্যায় নমঃ, মন্ত্রে পুষ্পমাল্যের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
ওঁ সূত্রেণ গ্রথিতং মাল্যং নানাপুষ্পসমন্বিতম্ ।
গন্ধচন্দনসংযুক্তং গৃহাণ পরমেশ্বরি ।।
তারপর ‘ ইদং পুষ্পমাল্যং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নিবেদয়ামি’ এইমন্ত্রে নিবেদন করবে ও দেবতাকে পরিয়ে দিবে ।
১৮. ধূপ— অর্চনা –
প্রজ্বলিত ধূপ আধারে স্থাপনপূর্বক অর্চনা করবে—
‘বং এতস্মৈ ধূপায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে ধূপায় নমঃ, মন্ত্রে ধূপের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
ওঁ বনস্পতিরসো দিব্যো গন্ধাঢ্যঃ সুমনোহরম্ ।
আঘ্রেয়ঃ সর্বদেবানাং ধূপোহয়ং প্রতিগৃহ্যতাম্ ।।
তারপর ‘এষ ধূপঃ ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
এইমন্ত্রে অর্ঘ্যজল প্রক্ষেপ দ্বারা নিবেদন করে বামহাতে ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে ডানহাতের মধ্যমা ও অনামার মধ্যমপর্বে অঙ্গুষ্ঠাগ্রসংযোগে ধূপ উত্তোলন করবে এবং দেবতার গায়ত্রী (‘ওঁ শিল্পাচার্য্যায় দেবায় নমস্তে বিশ্বকর্ম্মনে স্বাহা–) পাঠ করতে করতে তাঁর নাসিকা পর্যন্ত তিনবার ঘুরিয়ে নিজের ডানদিকে রাখবে।
১৯. দীপ— অর্চনা –
প্রজ্বলিত দীপ আধারে স্থাপনপূর্বক অর্চনা করবে—
‘বং এতস্মৈ দীপায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে দীপায় নমঃ, মন্ত্রে দীপের ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
ওঁ অগ্নিজ্যোতী-রবিজ্যোতিশ্চন্দ্রজ্যোতিস্তথৈব চ ।
জ্যোতিষামুত্তমো দেবি দীপোহয়ং প্রতিগৃহ্যতাম্ ।।
তারপর ‘এষ দীপঃ ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’ এইমন্ত্রে নিবেদন করে ধূপ নিবেদনের মত দেবতার চোখ পর্যন্ত ভ্রামিত করবে ও দীপ পাত্রে রাখবে।
২০. নৈবেদ্য— অর্চনা –
দেবতার সম্মুখে অথবা দক্ষিণে আধারোপরি নৈবেদ্য পাত্র স্থাপন করবে
‘বং এতস্মৈ সোপকরণ-নৈবেদ্যায় নমঃ’
(অন্ন হলে-‘বং এতস্মৈ সোপকরণ-অন্নায় নমঃ’)
মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে সোপকরণ-নৈবেদ্যায় নমঃ, মন্ত্রে নৈবেদ্যএর ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
অনন্তর ‘হূং’ মন্ত্রে অবগুণ্ঠন মুদ্রা প্রদর্শন, চক্রমুদ্রায় অভিরক্ষণ, ‘যং’ মন্ত্রে দোষশোষণ, ‘রং’ মন্ত্রে দহন এবং ‘বং’ মন্ত্রে ধেনুমুদ্রা প্রদর্শন করে নৈবেদ্য অমৃতময় ভাবনা করবে। অতঃপর মৎস্যমুদ্রায় নৈবেদ্য আচ্ছাদন করে ‘বাং’ মন্ত্র দশবার জপ করবে। পরে পাঠ করবে—
ওঁ নৈবেদ্যং বিবিধং দিব্যং সুমিষ্টং ফলমূলকম্ ।
শর্করাদিসমাযুক্তং চর্ব্যং চোষ্যং প্রগৃহ্যতাম্ ।।
‘ ইদং সোপকরণনৈবেদ্যং (অন্ন হলে- সোপকরণমন্নং)ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নিবেদয়ামি’ মন্ত্রে তিনবার অর্ঘ্যজল প্রোক্ষণ করে (অঙ্গুষ্ঠ-অনামাযোগে ছিটিয়ে) দেবতাকে নিবেদন করবে ।
কুশীতে অর্ঘ্যজল নিয়ে ‘ওঁ অমৃতোপস্তরণমসি স্বাহা’ মন্ত্রে তাম্রকুণ্ডে নিক্ষেপ করবে।
বাম হাতের তালুতে জল নিয়ে গ্রাসমুদ্রা প্রদর্শনপূর্বক ডান হাতে ‘প্রাণায় স্বাহা’, অপানায় স্বাহা’, ব্যানায় স্বাহা’, ‘উদানায় স্বাহা’, ‘সমানায় স্বাহা’-মন্ত্রে পঞ্চমুদ্রা প্রদর্শন করে কিছুক্ষণ চিন্তা করবে যে দেবতা নৈবেদ্য গ্রহণ করছেন।
ঐ সময় মূলমন্ত্র ‘বাং’ জপ করবে। পুনরায় অর্ঘ্যজল নিয়ে ‘ওঁ অমৃতাপিধানমসি স্বাহা’-মন্ত্রে তাম্রকুণ্ডে নিক্ষেপ করবে। অতঃপর পানীয়, পুনরাচমনীয় ও তাম্বূল নিবেদন করবে-
২১. পানীয়—অর্চনা
‘বং এতস্মৈ পানীয় জলায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে পানীয় জলায় নমঃ, মন্ত্রে পানীয় এর ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
জলঞ্চ শীতলং স্বচ্ছং সুগন্ধি সুমনোহরম্ ।
ময়া নিবেদিতং ভক্ত্যা পানীয়ং প্রতিগৃহ্যতাম্ ।।
তারপর ‘ ইদং পানার্থোদকং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নিবেদয়ামি’ এইমন্ত্রে নিবেদন করবে।
পুনরাচমনীয়— পূর্ববৎ
২৩. তাম্বুল— অর্চনা
‘বং এতস্মৈ তাম্বুলায় নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার সামান্যার্ঘ্য জল দ্বারা ছিটা দিয়ে
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে তাম্বুলায় নমঃ, মন্ত্রে তাম্বুলের এর ওপর গন্ধপুষ্প দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ, মন্ত্রে পুস্পটি শালগ্রাম শিলায় দিবে
অতঃপর একটি গন্ধপুষ্প নিয়ে
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎ সম্প্রদানায় বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
মন্ত্রে পূজা করবে
ফলপত্রসমাযুক্তং কর্পুরেণ সুবাসিতম্ ।
ময়া নিবেদিতং ভক্ত্যা তাম্বুলং প্রতিগৃহ্যতাম্ ।।
তারপর ‘ ইদং তাম্বুলং ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’ এইমন্ত্রে নিবেদন করবে।
এবারে ঘট পুজো বা প্রতিমা পুজক উভয়েই নীচের কর্ম গুলো করবেন।
মুলমন্ত্র জপ করে নিম্নলিখিতমন্ত্রে জপ বিসর্জন করবে
গুহ্যাতিগুহ্যগোপ্তা ত্বং গৃহাণাস্মৎকৃতং জপম্ ।সিদ্ধির্ভবতু মে দেব ত্বৎপ্রসাদাত সুরেশ্বর ।।
 
৪১) পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র-
ওঁ শিল্পচার্য্যং নমস্তুভ্যং নানালঙ্কার ভূষিতম্।
মম বিঘ্ন বিনাশায় কল্যানং কুরু মে সদা।।
এষ সচন্দনপুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলিঃ ওঁ বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ’
অতঃপর কৃতাঞ্জলি হয়ে প্রণাম মন্ত্র পাঠ করবে। যথা:-
 
৪২) প্রণামমন্ত্র-
দেবশিল্পি মহাভাগ দেবানাং কার্য্যসাধক ।
বিশ্বকর্মন্নমস্তুভ্যং সর্বাভীষ্টপ্রদয়ক ।।
গন্ধ পুষ্পে পুজো
এতে গন্ধপুষ্পে বিশ্বকর্ম্মন ষড়ঙ্গ দেবতাভ্য নমঃ
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে আবরন দেবতাভ্য নমঃ
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে গজ বাহনায় নমঃ
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে যন্ত্রাদিভ্য নমঃ
অতঃপর অন্নাদি নিবেদন অরাত্রিক করিয়া স্তব পাঠ করবে।
স্তব-
বিশ্বকর্মাষ্টকম্ –
নিরঞ্জনো নিরাকারঃ নির্বিকল্পো মনোহরঃ ।নিরাময়ো নিজানন্দঃ নির্বিঘ্নায় নমো নমঃ ॥ ১॥
অনাদিরপ্রমেয়শ্চ অরূপশ্চ জয়াজয়ঃ ।লোকরূপো জগন্নাথঃ বিশ্বকর্মন্নমো নমঃ ॥ ২॥
নমো বিশ্ববিহারায় নমো বিশ্ববিহারিণে ।নমো বিশ্ববিধাতায় নমস্তে বিশ্বকর্মণে ॥ ৩॥
নমস্তে বিশ্বরূপায় বিশ্বভূতায় তে নমঃ ।নমো বিশ্বাত্মভূথাত্মন্ বিশ্বকর্মন্নমোঽস্তু তে ॥ ৪॥
বিশ্বায়ুর্বিশ্বকর্মা চ বিশ্বমূর্তিঃ পরাত্পরঃ ।বিশ্বনাথঃ পিতা চৈব বিশ্বকর্মন্নমোঽস্তু তে ॥ ৫॥
বিশ্বমঙ্গলমাঙ্গল্যঃ বিশ্ববিদ্যাবিনোদিতঃ ।বিশ্বসঞ্চারশালী চ বিশ্বকর্মন্নমোঽস্তু তে ॥ ৬॥
বিশ্বৈকবিধবৃক্ষশ্চ বিশ্বশাখা মহাবিধঃ ।শাখোপশাখাশ্চ তথা তদ্বৃক্ষো বিশ্বকর্মণঃ ॥ ৭॥
তদ্বৃক্ষঃ ফলসম্পূর্ণঃ অক্ষোভ্যশ্চ পরাত্পরঃ ।অনুপমানো ব্রহ্মাণ্ডঃ বীজমোঙ্কারমেব চ ॥ ৮॥
ইতি বিশ্বকর্মাষ্টকং সম্পূর্ণম্
অতঃপর প্রতিমা পুজোতে হোম করবে।
হোমের পর দক্ষিণান্ত করিব
দক্ষিণা—
রজতখণ্ড বা স্বর্ণখণ্ড বা মুদ্রা (বা হরীতকী বা পুষ্প) কোন পাত্রে রেখে অর্চনা করবে। ‘বং এতস্মৈ কাঞ্চনমূল্যায় (রজতখণ্ডায় বা মুদ্রকায়) নমঃ’ মন্ত্রে তিনবার অর্ঘ্যজলে প্রোক্ষণ (চিৎ হস্তে জলের ছিটা) করবে।
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে বং এতস্মৈ কাঞ্চনমূল্যায় (রজতখণ্ডায়) নমঃ’, মন্ত্রে দক্ষিণাদ্রব্যের উপর গন্ধপুষ্প অর্পণ করবে।
নিম্নোক্ত মন্ত্রে আবার গন্ধপুষ্পে পূজা করবে-
‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ,
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে এতৎসম্প্রদানায় বাং বিশ্বকর্ম্মনে নমঃ।
তারপর-
বিষ্ণুরোম্ তৎসদদ্য ভাদ্র মাসি অমুকপক্ষে অমুকতিথৌ ষড়শীতি সংক্রান্ত্যাং অমুক গোত্রস্য শ্রীঅমুকদেবশর্মা ( পরার্থে- অমুকগোত্রস্য অমুকদেবশর্মণঃ / দাসস্য) [অমুকগোত্রঃ শ্রীঅমুকঃ (যজমানের গোত্র ও নাম)] বিশ্বকর্ম্মন প্রীতিকামনায়া কৃতৈতৎ বিশ্বকর্ম্মপূজাকর্মণঃ সাঙ্গতার্থং দক্ষিণামিদং কাঞ্চনমূল্যং (রজতখণ্ডমর্চিতং) শ্রীবিষ্ণুদৈবতং বিশ্বকর্ম্মনে অহং সম্প্রদদে (অপরের জন্য হলে- সম্প্রদদানি)
বলে অর্ঘ্যজলবিন্দু প্রক্ষেপ দ্বারা নিবেদনপূর্বক দেবতার উদ্দেশে প্রদান করবে।
অতঃপর অচ্ছিদ্রাবধারণ ও বৈগুণ্য সমাধান করবে।
৫০) অচ্ছিদ্রাবধারণ ও বৈগুণ্য সমাধান-
প্রথমে করজোড়ে বলবে-
‘ওঁ কৃতৈতৎ বিশ্বকর্ম্মন পূজাকর্মাচ্ছিদ্রমস্তু’।
পরে দক্ষিণ হস্তে জল গণ্ডুষ নিয়ে বলবে-
‘ওঁ তৎসদদ্য ভাদ্র মাসি অমুকপক্ষে অমুকতিথৌ ষড়শীতি সংক্রান্ত্যাং অমুক গোত্রস্য শ্রীঅমুকদেবশর্মা ( পরার্থে- অমুকগোত্রস্য অমুকদেবশর্মণঃ / দাসস্য) [অমুকগোত্রঃ শ্রীঅমুকঃ (যজমানের গোত্র ও নাম)] কৃতেহস্মিন্ কর্মণি যদ্বৈগুণ্যং জাতং তদ্দোষপ্রশমনায় শ্রীবিষ্ণুস্মরণমহং করিষ্যে’
এবং ঐ জল সম্মুখস্থ জলপাত্রে ফেলবে।
অনন্তর পাঠ করবে-
‘ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্।
পাঠান্তে ‘ওঁ বিষ্ণুঃ’ এই মন্ত্র ১০ বার জপ করবে। করজোড়ে পাঠ করবে-
‘ওঁ প্রীয়তাং পুণ্ডরীকাক্ষঃ সর্বযজ্ঞেশ্বরো হরিঃ।
তস্মিংস্তুষ্টে জগত্তুষ্টং প্রীণিতে প্রীণিতং জগৎ’।
তারপরে হাতে এক গণ্ডুষ জল নিয়ে-
‘ওঁ এতৎ কর্মফলং শ্রীকৃষ্ণার্পণমস্তু’ মন্ত্রে দেবতার উদ্দেশে ত্যাগ করবে।
ক্ষমাপ্রার্থনা-
করজোড়ে বলবে-
ওঁ বিধিহীনং ক্রিয়াহীনং মন্ত্রহীনং যদর্চিতং
ময়া নিবেদিতং ভক্ত্যা পরিপূর্ণং তদস্তু মে।
কর্মণা মনসা বাচা ত্বত্তো নান্যো গতির্মম
অন্তশ্চারেণ ভূতানাং দ্র্রষ্টা ত্বং পরমেশ্বর।।
প্রতিমা ক্ষেত্রে অতঃপর নিম্নোক্ত মন্ত্রে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে আত্মসমর্পণকরতঃ চরণামৃত পান করে প্রসাদ ধারণ করবে।
দেবতাকে বিশ্রাম দিবে। বিকালে বৈকালীন দিতে হবে। সন্ধ্যায় সন্ধ্যারতি, রাত্রিকালীনভোগ ও শয়ন দিতে হবে।পরদিন বিসর্জন করবে।

সোর্স -বিশুদ্ধ পুজার মন্ত্র

 এই নিম্নলিখিত ১০টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো বিশ্বকর্মা সম্পর্কিত:

প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা কে?

বিশ্বকর্মা হলেন হিন্দু ধর্মের একটি দেবতা, যার কাজ শিল্পকর্ম এবং যানচালনা সংক্রান্ত।
প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা পূজা কোন সময়ে পালন করা হয়?

বিশ্বকর্মা পূজা হিন্দু পঞ্চাঙ্গের অনুযায়ী আশ্বিন মাসে অনুষ্ঠান করা হয়, যা সাধারণভাবে সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবরে পড়ে।
প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা দেবতার কি বিশেষ চিহ্নিত রূপ আছে?

বিশ্বকর্মা দেবতা সাধারণভাবে শিল্পকর্মীর একটি মূর্তির সাথে প্রতিষ্ঠিত থাকেন। তিনি একটি পাটলে হতে পারে এবং তার হাতে শিল্পকর্মীর সরঞ্জাম ধারণ করে থাকেন।

 

প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা পূজা কোথায় এবং কিভাবে আয়োজিত হয়?

বিশ্বকর্মা পূজা বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, স্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, এবং অন্যান্য হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত। এটি সাধারণভাবে মন্দিরে বা শিল্পকর্মীদের কাজস্থলে আয়োজন করা হয়, যেখানে বিশ্বকর্মার মূর্তি প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং পূজা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা পূজা মন্ত্র কি?

বিশ্বকর্মা পূজা সময়ে বিশেষ মন্ত্র পড়া হয়, যেগুলি বিশ্বকর্মা দেবতার স্তুতি এবং পূজা করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা পূজা সময়ে কি প্রসাদ প্রদর্শন করা হয়?

বিশ্বকর্মা পূজা সময়ে বিশেষ প্রসাদ প্রদর্শন করা হয়, যেগুলি শিল্পকর্মীদের জন্য সাধারণভাবে আহার সামগ্রী যেমন ভোজন এবং মিষ্টি সম্পর্কিত হতে পারে।
প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা পূজা সময়ে কি প্রধান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়?

বিশ্বকর্মা পূজা সময়ে প্রধান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, যেগুলি বিশেষ মন্ত্র পড়া, দেবতার মূর্তির সামনে পূজা প্রদর্শন, ধূপের প্রজ্বলন, দিয়া জ্বলানো, প্রসাদ প্রদর্শন, ও শ্রদ্ধার্ঘ্য সম্পর্কিত হতে পারে।
প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা পূজা কোন দেশে সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত এবং প্রচলিত?

বিশ্বকর্মা পূজা সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত এবং প্রচলিত ভাবে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে (ভারতে) অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা পূজা প্রাচীন হিন্দু ধর্মের কি অংশ?

বিশ্বকর্মা পূজা প্রাচীন হিন্দু ধর্মের একটি প্রাচীন অংশ এবং শিল্পকর্মীদের সম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব।
প্রশ্নঃ বিশ্বকর্মা পূজা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বিশ্বকর্মা পূজা শিল্পকর্মীদের কাজের সর্বোত্তম দেখানোর এবং নতুন প্রকল্পের শুরু করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব হতে পারে। এটি শিল্পকর্মীদের সামাজিক ও আর্থিক উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

You May Like Also Also Like This

Post a Comment

0 Comments


Advertisement