-->

Saraswati Puja Mantras, Puspanjali Mantra, Bengali Saraswati Puja Mantras

The Goddess Saraswati is the Goddess of knowledge and learning. Saraswati Puja Mantras are uttered while performing the puja. Following are the Saraswati Puja Mantras for performing puja and 'pushpanjali'.
Saraswati Puja Mantras


Puspanjali Mantra

Om Bhadro Kallyoi Namo Nityang
Saraswatyoi Namo Namah
Veda Vedanta Vedanga
Bidya sthanebhaya
Ebacho esso swachandana
Billyopatro Pushpanjali
Om Oing Shree Shree Saraswatoi Namoh

Pranam mantra


Om Jay Jay Debi Characharo Sare
Kuchojugo Shobhito Mukta Hare
Veena Ranjito Pustaka Haste
Bhagobati Bharati Debi Namohstute

Om Saraswati Maha Bhage
Vidya Kamolo Lochone
Biswarupe Bishalakshi
Vidyang dehi namohastute

সরস্বতী পুজা মন্ত্র  (বাংলা)



ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে,

কুচযুগ শোভিত মুক্তাহারে

বীণা পুস্তক রঞ্জিত হস্তে

ভগবতি ভারতী দেবী নমোহস্তুতে ।।

ওঁ সরস্বতী মহাভাগে

বিদ্যে কমলোচনে

বিশ্বরূপে বিশালাক্ষি

বিদ্যেং দেহি নমোহস্তুতে ।।
 

Saraswati Puja Mantras, Puspanjali Mantra, Puja Mantras, Saraswati Puja,





Saraswati Dhyan Mantra :-

|| Om Saraswati Mayaa Drishtwa, Veena Pustak Dharnim | Hans Vahini Samayuktaa Maa Vidya Daan Karotu Me Om ||

 सरस्वती ध्यान मंत्र :-

|| ॐ सरस्वती मया दृष्ट्वा, वीणा पुस्तक धारणीम् । हंस वाहिनी समायुक्ता मां विद्या दान करोतु में ॐ || 

 

  সরস্বতী পূজা সম্পর্কে কিছু কথা

সরস্বতী পূজা-পুষ্পাঞ্জলী মন্ত্র,  প্রণাম মন্ত্র, স্তব ও প্রার্থনা মন্ত্র,  সরস্বতী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি অন্যতম প্রচলিত পূজা। সরস্বতী দেবীকে শিক্ষা, সংগীত ও শিল্পকলার দেবী ও আশীর্বাদাত্রী মনে করা হয়। বাংলা মাঘ মাসের ৫মী তিথিতে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা, সংগীত ও শিল্পকলায় সফলতার আশায় শিক্ষার্থীরা দেবীর পূজা করে থাকে। বাকদেবী, বিরাজ, সারদা, ব্রাহ্মী, শতরূপা, মহাশ্বেতা, পৃথুধর, বকেশ্বরী সহ আরো অনেক নামেই দেবী ভক্তের হৃদয়ে বিরাক করে। পুরাণ অনুযায়ী দেবী সরস্বতী ব্রহ্মের মুখ থেকে উথ্থান। দেবীর সকল সৌন্দর্য্য ও দীপ্তির উৎস মূলত ব্রহ্মা। পঞ্চ মস্তকধারী দেবী ব্রহ্মা এক স্বকীয় নিদর্শন। পূজার জন্য দেবী সরস্বতীর মূর্তি শ্বেত বস্র পরিধান করে থাকে যা পবিত্রতার নিদর্শন। দেবীর আসন কে পুষ্পশোভামন্ডিত করে রাখা হয়। পরিবারের সকল সদস্য খুব ভোরে স্নান শেষে পরিস্কার বস্র পরিধান করে দেবীর সামনে অবস্থান করে থাকে। পুরোহিত পূজা শুরু করবার আগ পর্যন্ত দেবীর মুখমন্ডল ঢাকা থাকে। পূজার অর্ঘ্যর পাশাপাশি দেবীর পূজার আরেকটি প্রধান অংশ ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তক। সরস্বতী পূজার একটি বিশেষ অর্য্য হল পলাশ ফুল। দেবীর অঞ্জলীর জন্য এটি একটি অত্যবশ্যকীয় উপাদান।

পুষ্পাঞ্জলী মন্ত্র (৩ বার পাঠসহ)
=================

ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে,
কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।
বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে,
ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।
নমঃভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ।
বেদ-বেদাঙ্গ-বেদান্ত-বিদ্যা-
স্থানেভ্য এব চ।।
এস স-চন্দন পুষ্পবিল্ব
পত্রাঞ্জলি সরস্বতৈ নমঃ।।
প্রনাম মন্ত্র
=======

নমো সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে।
বিশ্বরূপে বিশালাক্ষ্মী বিদ্যাংদেহি নমোহস্তুতে।।
জয় জয় দেবী চরাচর সারে,
কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।
বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে,
ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।
 
সরস্বতীর স্তব
=======
শ্বেতপদ্মাসনা দেবী শ্বেত
পুষ্পোপশোভিতা।
শ্বেতাম্ভরধরা নিত্যা শ্বেতাগন্ধানুলে
পনা।।
শ্বেতাক্ষসূত্রহস্তা চ
শ্বেতচন্দনচর্চ্চিতা।
শ্বেতবীণাধরা শুভ্রা শ্বেতালঙ্কারবভূ
ষিতা
বন্দিতা সিদ্ধগন্ধর্ব্বৈ
র্চ্চিতা দেবদানবৈঃ।
পূঝিতা মুনিভি:
সর্ব্বৈঋষিভিঃ স্তূয়তে সদা।।
স্তোত্রেণানেন
তাং দেবীং জগদ্ধাত্রীং সরস্বতীম্।
যে স্মরতি ত্রিসন্ধ্যায়ং সর্ব্বাং বিদ্যাং লভন্তি তে।।

 জেনে নিন দেবী সরস্বতী – তিনি আসলে কে ?

দেবী সরস্বতী – তিনি আসলে কে ? আমরা যে দেবী সরস্বতীকে হিমালয়কন্যা পার্বতীর কন্যা ও লক্ষ্মী-কার্তিক-গণেশের সহোদরা ভগ্নীরূপে দেখি, সেটা নিতান্তই বাঙালিদের ঘরোয়া মনগড়া গল্প, এর পিছনে কোন শাস্ত্রীয় অনুমোদন নেই। সরস্বতী সৃষ্টিদেবতা ব্রহ্মার সহধর্মিণী এবং বিষ্ণুপত্নী লক্ষ্মী ও মহেশ্বরজায়া পার্বতীর সঙ্গে একযোগে ত্রিদেবী নামে পরিচিতা। সরস্বতী প্রাচীনতম হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বেদসমূহের প্রসূতি। ঋগ্বেদে বাগ্দেবী ত্রয়ীমূর্তি – ভূ: ভুব: স্ব:, জ্ঞানময়ীরূপে সর্বত্রব্যাপিনী। বিশ্বভূবন প্রকাশ তারই জ্যোতিতে। হৃদয়ে সে আলোকবর্তিকা যখন প্রজ্বলিত হয়, তখন জমাট বাধা অজ্ঞানতারূপ অন্ধকার যায় দূর হয়ে। অন্তরে, বাইরে সর্বত্র তখন জ্বলতে থাকে জ্ঞানের পুণ্য জ্যোতি। এই জ্যোতিজ্ঞানই ব্রহ্মজ্ঞান, এই জ্যোতিই সরস্বতী। আলোকময়ী, তাই তিনি সর্বশুক্লা। তিন গুণের মধ্যে তিনি সত্ত্বগুণময়ী, অনন্ত জ্ঞানময়
ঈশ্বরের বাক্শক্তির প্রতীক বাগ্দেবী। গতিময় জ্ঞানের জন্যই ঋগ্বেদে তাঁকে নদীরূপা কল্পনা করা হয়েছে, যিনি প্রবাহরূপে কর্মের দ্বারা মহার্ণব বা অনন্ত সমুদ্রে মিলিত হয়েছেন। কল্যাণময়ী নদীতটে সাম গায়কেরা বেদমন্ত্র উচ্চারণে ও সাধনে নিমগ্ন হতো। তাদের কণ্ঠে উদ্গীত সাম সঙ্গীতের প্রতীকী বীণা দেবীর করকমলে। সরস্বতী বিধৌত ব্রহ্মাবর্ত ভূমি বেদ- বেদাঙ্গ-বেদান্ত আশ্রয় করে সাধনা করতে আশ্রমবাসী ঋষিগণ। সেই ভাবটি নিয়েই দেবী ‘পুস্তক হস্তে’, গ্রন্থ রচনার সহায়ক লেখনীটিও তাঁর সঙ্গে। 

মার্কণ্ডেয় পুরাণে শ্রীশ্রীচণ্ডী উত্তরলীলায় শুম্ভ নিশুম্ভ নামক অসুরদ্বয়কে বধ করার সময় দেবীর যে মূর্তির কল্পনা করা হয়েছিল তা ছিল মহাসরস্বতী। এ মূর্তি অষ্টভূজা – বাণ, কার্মূক, শঙ্খ, চক্র, হল, মুষল, শূল ও ঘন্টা ছিল তাঁর অস্ত্র। তাঁর এই সংহারলীলাতেও কিন্তু জ্ঞানের ভাবটি হানি ঘটেনি, কেননা তিনি ‘একৈবাহং জগত্যত্র দ্বিতীয়াকা মমাপরা’ বলে মোহদুষ্ট শুম্ভকে অদ্বৈত জ্ঞান দান করেছিলেন। স্কন্দ পুরাণে প্রভাসখণ্ডে দেবী সরস্বতীর নদীরূপে অবতরণের কাহিনী বর্ণিত আছে। বায়ু পুরাণ অনুযায়ী কল্পান্তে সমুদয় জগৎ রুদ্র কর্তৃক সংহৃত পুনর্বার প্রজাসৃষ্টির জন্য প্রজাপতি ব্রহ্মা নিজ অন্তর থেকেই দেবী সরস্বতীকে সৃষ্টি করেন। সরস্বতীকে আশ্রয় করেই ব্রহ্মার প্রজাসৃষ্টি সূচনা। গরুড় পুরাণে সরস্বতী শক্তি অষ্টবিধা। শ্রদ্ধা, ঋদ্ধি, কলা, মেধা, তুষ্টি, পুষ্টি, প্রভা ও স্মৃতি। তন্ত্রে এই অষ্টশক্তি যথাক্রমে যোগ, সত্য, বিমল, জ্ঞান, বুদ্ধি, স্মৃতি, মেধা ও প্রজ্ঞা। তন্ত্র শাস্ত্রমতে সরস্বতী বাগীশ্বরী – অং থেকে ক্ষং পঞ্চাশটি বর্ণে তাঁর দেহ। আবার পদ্মপুরাণ-এ উল্লিখিত সরস্বতীস্তোত্রম্-এ বর্ণিত হয়েছে – শ্বেতপদ্মাসনা দেবী শ্বেতপুষ্পোপশোভ িতা শ্বেতাম্বরধরা নিত্যা শ্বেতগন্ধানুলেপ না শ্বেতাক্ষসূত্রহস্তা চ শ্বেতচন্দনচর্চি তা শ্বেতবীণাধরা শুভ্রা শ্বেতালঙ্কারভূষ িতা ইত্যাদি। এর অর্থ দেবী সরস্বতী শ্বেতপদ্মে আসীনা, শ্বেতপুষ্পে শোভিতা, শ্বেতবস্ত্র- পরিহিতা এবং শ্বেতগন্ধে অনুলিপ্তা।
অধিকন্তু তাঁহার হস্তে শ্বেত রুদ্রাক্ষের মালা; তিনি শ্বেতচন্দনে চর্চিতা, শ্বেতবীণাধারিণী, শুভ্রবর্ণা এবং শ্বেত অলঙ্কারে ভূষিতা। 

ধ্যান বা স্তোত্রবন্দনায় উল্লেখ না থাকলেও সরস্বতী ক্ষেত্রভেদে দ্বিভূজা অথবা চতুর্ভূজা এবং মরালবাহনা অথবা ময়ূরবাহনা। উত্তর ও দক্ষিণ ভারতে সাধারণত ময়ূরবাহনা চতুর্ভূজা সরস্বতী পূজিত হন। ইনি অক্ষমালা, কমণ্ডলু, বীণা ও বেদপুস্তকধারিণী। বাংলা তথা পূর্বভারতে সরস্বতী দ্বিভূজা ও রাজহংসের পৃষ্ঠে আসীনা। রাজহংস কেন সরস্বতীর বাহন? কেননা জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে সর্বত্রই হাঁসের সমান গতি, যেমন জ্ঞানময় পরমাত্মা সর্বব্যাপী – স্থলে, অনলে, অনিলে সর্বত্র তাঁর সমান প্রকাশ। হংস জল ও দুধের পার্থক্য করতে সক্ষম। জল ও দুগ্ধ মিশ্রিত থাকলে হাঁস শুধু সারবস্তু দুগ্ধ বা ক্ষীরটুকুই গ্রহণ করে, জল পড়ে থাকে।

 জ্ঞান সাধনার ক্ষেত্রেও হংসের এ স্বভাব তাৎপর্য বহন করে। সংসারে নিত্য ও অনিত্য দুটি বস্তুই বিদ্যমান। বিবেক বিচার দ্বারা নিত্য বস্তুর বিদ্যমানতা স্বীকার করে তা গ্রহণ শ্রেয়, অসার বা অনিত্য বস্তু সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য। হাঁস
জলে বিচরণ করে কিন্তু তার দেহে জল লাগে না। মহাবিদ্যা প্রতিটি জীবের মধ্যে থেকেও জীবদেহের কোন কিছুতে তাঁর আসক্তি নেই, তিনি নির্লিপ্তা। হিন্দুদের দেবী হওয়া সত্ত্বেও বৌদ্ধ ও জৈনদের কাছেও পুজো পেয়েছেন সরস্বতী। গান্ধারে পাওয়া বীণাবাদিনী সরস্বতীর মূর্তি থেকে বা সারনাথে সংরক্ষিত মূর্তিতে এর প্রমাণ মেলে। অনেক বৌদ্ধ উপাসনালয়ে পাথরের ছোট ছোটো মূর্তি আছে তাতে সরস্বতী বীণা বাজাচ্ছেন, অবিকল সরস্বতীমূর্তি। মথুরায় জৈনদের প্রাচীন কীর্তির আবিষ্কৃত নিদর্শনে সরস্বতীর যে মূর্তি পাওয়া গেছে সেখানে দেবী জানু উঁচু করে একটি চৌকো পীঠের উপর বসে আছেন, এক হাতে বই। শ্বেতাম্বরদের মধ্যে সরস্বতী পুজোর অনুমোদন ছিল। জৈনদের চব্বিশজন শাসনদেবীর মধ্যে সরস্বতী একজন এবং ষোলজন বিদ্যাদেবীর মধ্যে অন্যতমা হলেন সরস্বতী। শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর উভয় জৈন সম্প্রদায়েই সরস্বতীর স্থান হয়ে গেল ব্রাহ্মণ্য ধর্ম থেকে গৃহীতা একজন প্রধান দেবীরূপে। 

সরস্বতী শব্দের দুই অর্থ – একটি ত্রিলোক্য ব্যাপিনী সূর্যাগ্নি, অন্যটি নদী। সরস্ + বতী = সরস্বতী, অর্থ জ্যোতির্ময়ী।
আবার সৃ ধাতু নিস্পন্ন করে সর শব্দের অর্থ জল। অর্থাৎ যাতে জল আছে তাই সরস্বতী। ঋগ্বেদে আছে ‘অম্বিতমে নদীতমে দেবীতমে সরস্বতী’, সম্ভবত সরস্বতী নদীর তীরেই বৈদিক এবং ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির উদ্ভব। শুধু বৈদিক যুগেই নয়, পরবর্তীকালে মহাভারত, পুরাণ, কাব্যে পূতসলিলা সরস্বতীর মহিমা বর্ণিত হয়েছে। সরস্বতী নদীর উৎপত্তিস্থল ছিল হিমালয়ের সিমুর পর্বতে, সেখান থেকে পাঞ্জাবের আম্বালা জেলার আদবদ্রী নামক স্থানে সমভূমিতে অবতরণ করেছিল। যে প্রসবণ থেকে এই নদীর উৎপত্তি তা ছিল প্লক্ষ্ণাবৃক্ষের নিকটে, তাই একে বলা হতো প্লক্ষ্ণাবতরণ। ঋগ্বেদের যুগে গঙ্গা যমুনা ছিল অপ্রধান নদী, সরস্বতী নদীই ছিল সর্বপ্রধান ও সর্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয়। এর তীরে ছিল প্রসিদ্ধ তীর্থভূমি। সরস্বতী ও দৃষদ্বতীর মধ্যস্থান দেবনির্মিত স্থান হিসেবে বিবেচ্য হত। 


ব্রাহ্মণ ও মহাভারতে উল্লেখিত সারস্বত যজ্ঞ এই নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হত। মহাভারত রচনা হওয়ার আগেই রাজপুতানার মরুভূমিতে সরস্বতী নদী অদৃশ্য হয়ে গেলেও কয়েকটি স্রোতধারা অবশিষ্ট ছিল। এই স্রোতধারা হল চমসোদ্ভেদ, শিবোদ্ভেদ ও নাগোদ্ভেদ। রাজস্থানের মরুভূমির বালির মধ্যে চলুর গ্রামের নিকটে সরস্বতী অদৃশ্য
হয়ে ভবানীপুরে দৃশ্য হয়, আবার বলিচ্ছপুর নামকস্থানে অদৃশ্য হয়ে বরখের নামক স্থানে দৃশ্য হয়। তান্ডমহাব্রাহ্মণে সরস্বতী নদীর উৎপত্তিস্থল হিসাবে প্লক্ষ্ণপ্রস্রবণ ও বিনাশস্থল হিসেবে বিনশনের নামোল্লেখ আছে। লাট্যায়ণের শ্রৌতসূত্র মতে, সরস্বতী নামক নদী পশ্চিম মুখে প্রবাহিতা, তার প্রথম ও শেষভাগ সকলের প্রত্যক্ষ গোচর, মধ্যভাগ ভূমিতে নিমগ্ন যা কেউ দেখতে পায় না, তাকেই বিনশন বলা হয়। অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণের মতে, বৈদিক সরস্বতীর লুপ্তাবশেষ আজও কচ্ছ ও দ্বারকার কাছে সমুদ্রের খাড়িতে গিয়ে মিলিত হয়েছে। সরস্বতী নদীর বিনাশ ঘটেছিল অবশ্যই বৈদিক যুগের শেষভাগে, একমতে খ্রিস্টের দেড় হাজার বছরেরও আগে। মহাভারতে আছে যে নিষাদদের চোখের আড়ালে থাকার জন্য বিনাশণ নামক স্থানে মরুভূমিতে অদৃশ্য হয়েছে। নদীর স্থানীয় নামই এই ঐতিহ্য বহন করছে। আবার অনেকে বলেন, সিন্ধুনদই সরস্বতী। সরস্বতী ও সিন্ধু দুটি শব্দের অর্থই নদী। সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পূজার বর্তমান রূপটি আধুনিককালে প্রচলিত হয়েছে। 

প্রাচীনকালে তান্ত্রিক সাধকরা সরস্বতীসদৃশা দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন বলে জানা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে পাঠশালায় প্রতি মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে ধোয়া চৌকির ওপর তালপাতার দোয়াত-কলম রেখে পূজা করার প্রথা ছিল। শ্রীপঞ্চমী তিথিতে ছাত্ররা বাড়িতে বাংলা বা সংস্কৃত গ্রন্থ, শ্লেট, দোয়াত ও কলমে সরস্বতী পূজা করত। ইংরেজি ম্লেচ্ছ ভাষা হওয়ায় সরস্বতী পূজার দিন ইংরেজি বইয়ের পূজা নিষিদ্ধ ছিল। আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পূজার প্রচলন হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে সরস্বতী দেবী হলেও মেয়েরা অঞ্জলি দিতে পারত না। কিছু পণ্ডিতের মতে সমাজপতিরা ভয় পেতেন হয়তো এই সুযোগে ধর্মের নামে মেয়েরা দাবি করে বসেন লেখাপড়ার স্বাধীনতা ! শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, 

শ্রীপঞ্চমীর দিন সকালেই সরস্বতী পূজা সম্পন্ন করা হয় সাধারণ পূজার আচারাদি মেনে। তবে এই পূজায় কয়েকটি বিশেষ উপাচার বা সামগ্রীর প্রয়োজন হয়, যেমন অভ্র-আবির, আমের মুকুল, দোয়াত- কলম ও যবের শিষ, বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুল। লোকাচার অনুসারে ছাত্রছাত্রীরা পূজার আগে কুল ভক্ষণ করে না। পূজার দিন লেখাপড়া নিষেধ থাকে। যথাবিহিত পূজার পর লক্ষ্মী, নারায়ণ, লেখনী-মস্যাধার, পুস্তক ও বাদ্যযন্ত্রেরও পূজা করা হয়। পূজার শেষে পুষ্পাঞ্জলি। পরদিন সকালে ফের পূজার পর চিড়া ও দই মেশানো দধিকরম্ব বা দধিকর্মা নিবেদন করে পূজা সমাপ্ত হয় ও সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বসন্ত পঞ্চমীতে অনুষ্ঠিত সরস্বতী পূজার পরের দিনটি বাংলায় শীতলষষ্ঠী। কোনো কোনো পরিবারে এদিন অরন্ধন পালন ও ‘গোটা-সেদ্ধ’ খাওয়ার প্রথা আছে। অষ্টাদশ শতকে নদীয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের সভাকবি ভারতচন্দ্র রায় গুণাকরের অন্নদামঙ্গলে ত্রিপদী ছন্দে সরস্বতী বন্দনায় দেবীর প্রতি ভক্তের শ্রদ্ধার নিদর্শন মেলে সেই সময়ের বঙ্গভূমিতে।
—— দেবী সরস্বতীর
কাছে কামনা করি….
সামনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক
দু’দুটো বড় পরীক্ষা আসছে, তার
জন্যে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রস্তুতি হোক সুন্দর।

You May Like Also Also Like This

Post a Comment

2 Comments


Advertisement